ফাইল চিত্র।
চতুর্থ পর্বের আনলকেও মঙ্গলাহাট চালু করার অনুমতি দিল না হাওড়া জেলা প্রশাসন। তবে পুরসভার সামনে সংহতি মার্কেট খুলে দেওয়া হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, মঙ্গলাহাটে যে ভাবে ভিড় হয়, তাতে এখনই হাট খোলার অনুমতি দিলে বিপদ বাড়বে। তাই হাট বসানোর জন্য বিকল্প জায়গা খোঁজা হচ্ছে। প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শহরের বাইরে কোনও অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গায় অস্থায়ী ভাবে হাট চালু করা হবে। এতে অবশ্য তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন হাওড়া হাটের ব্যবসায়ীরা।
লকডাউনের শুরুতেই, গত ২৪ মার্চ বন্ধ হয়ে যায় হাওড়া ময়দান সংলগ্ন এলাকায় বসা মঙ্গলাহাট। আগে শুধু মঙ্গলবার এই হাট বসলেও বর্তমানে কেনাকাটা শুরু হয়ে যেত রবিবার বিকেল থেকেই। চলত মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত। হাটের জন্য কয়েক লক্ষ মানুষের সমাবেশ হত ওই চত্বরে। কয়েক কোটি টাকার লেনদেন করতেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। সেই হাট গত পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে পুরোপুরি বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই বিপাকে পড়েছেন সেখানকার অগুনতি ব্যবসায়ী।
জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, মোট ১৪টি বহুতলে এই হাট বসে। জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দফতর-সহ হাওড়া জেলা হাসপাতাল ও হাওড়া আদালতের সংলগ্ন জায়গায় রয়েছে ওই বহুতলগুলি। গত কয়েক মাসে হাট না বসলেও অগস্ট মাসের আগে ওই চত্বরে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছিল। আক্রান্ত হচ্ছিলেন বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মীরা। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে ঋষি বঙ্কিম সরণি, মহাত্মা গাঁধী রোড, হাট লেন-সহ ওই এলাকার একাধিক রাস্তা কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করে ঘিরে রাখা হয়েছিল প্রায় এক মাস।
হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘আমরা পুরসভার সামনে সংহতি মার্কেট খুলে দিচ্ছি। কিন্তু মঙ্গলাহাট চালু করে নতুন করে বিপদ বাড়ানো যাবে না। তাই শহরের বাইরে ঊনসানি বা অঙ্কুরহাটিতে বিকল্প জায়গা খোঁজা হচ্ছে। সেখানে অস্থায়ী ভাবে হাট চালু করা হবে।’’
যদিও হাট সরানোর বিষয়টি নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের সংগঠনের নেতারা। হাওড়া হাট সমন্বয় সমিতির কার্যকরী সমিতির সদস্য দেবাশিস ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা এই জায়গায় লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে দোকান কিনেছি। আমরা নতুন করে দোকান কিনব কী করে? দোকান না থাকলে বসবই বা কোথায়?’’ ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, হাওড়া ময়দান চত্বরে হাটের সুবিধা হল, সামনেই হাওড়া স্টেশন। বিভিন্ন জেলা থেকে বাস বা ট্রেনে ক্রেতারা সহজেই আসতে পারতেন সেখানে। অঙ্কুরহাটি বা ঊনসানিতে হাট বসলে সেখানে ক্রেতারা পৌঁছবেন কী করে, সেই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।