Narendrapur

মারধর করে ‘খুন’, তরুণীর দেহ মিলল শ্বশুরবাড়ি থেকে

ওই ঘটনার পর থেকে মৃতার স্বামী স্বপন নস্কর-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সকলেই পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২০ ০২:৫৪
Share:

নিহত বিপাশা নস্কর।

শ্বশুরবাড়ি থেকে এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। দাবি অনুযায়ী পণ না পাওয়ার কারণেই ওই তরুণীকে খুন করা হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

Advertisement

সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার খেয়াদহ হাসপাতাল মোড় এলাকায়। এ দিন সকালে প্রতিবেশীরা দেখেন, বিপাশা নস্কর (২৬) নামে ওই তরুণীর মৃতদেহ বাড়ির বারান্দায় পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় বিপাশার মা-বাবার বাড়িতে। ওই ঘটনার পর থেকে মৃতার স্বামী স্বপন নস্কর-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সকলেই পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, বছর তিনেক আগে বিপাশার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল স্বপনের। তাদের দেড় বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের সময়ে নগদ টাকা ও গয়না-সহ প্রচুর পণ দেওয়া হয়েছিল বলে বিপাশার পরিবারের দাবি। তা সত্ত্বেও বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে আরও পণের দাবিতে বিপাশাকে মারধর করা শুরু হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে বেশ কয়েক বার পুলিশে অভিযোগও দায়ের করা হয়। কিন্তু তার পরেও বিপাশার উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ হয়নি।

Advertisement

মৃতার মা পুষ্পবালা মণ্ডল বলেন, ‘‘মেয়েকে মারধর করে বেশ কয়েক বার আমাদের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আমরা ভয় পেয়ে গিয়ে কিছু নগদ টাকা দিলে তবে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হত ওকে। কিন্তু টাকা নেওয়ার মাস দুয়েক পর থেকেই ফের শুরু হত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। মেয়ে কখনও আমাদের ফোন করে সে সব কথা বললে ওকে বেধড়ক মারধর করা হত।’’

নির্যাতনের কথা মেনে নিয়েছেন বিপাশার শ্বশুরবাড়ির দিকের আত্মীয়স্বজনেরাও। তাঁদেরও অভিযোগ, সম্প্রতি স্ত্রীকে মারধর করে বাবা-মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল স্বপন। জানিয়েছিল, দু’লক্ষ টাকা না-পেলে স্ত্রীকে আর ফিরিয়ে নেবে না সে। কয়েক মাসের মধ্যে ওই টাকার ব্যবস্থা হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন বিপাশার পরিজনেরা। তা শুনে বিপাশাকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হলেও কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁর উপরে চরম শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। বিপাশার পরিজনেরা জানান, টাকা জোগাড় করতে না পারায় তাঁরা ওই তরুণীর শ্বশুরবাড়িতে যেতে পারছিলেন না।

পুষ্পবালাদেবী বলেন, ‘‘আজ সকালে বিপাশার শ্বশুরবাড়ির এক প্রতিবেশী ফোন করে জানান, মেয়েকে খুন করে বারান্দায় ফেলে রাখা হয়েছে। এর পরে আমরা গিয়ে দেখি, বারান্দায় মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে বিপাশা।’’

নরেন্দ্রপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদেহের সুরতহাল করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, বেধড়ক মারধর করার পরে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে ওই তরুণীকে খুন করা হয়েছে। গলায় কালশিটে রয়েছে। তা ছাড়া, দেহের একাধিক জায়গায় মারধরের স্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে বিপাশার শ্বশুরবাড়ির কারও হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে একটি বধূ-হত্যার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে নরেন্দ্রপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। মৃতার শিশুপুত্রটি তার বাবার কাছেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement