বস্তিবাসীদের হাতে করোনা-সতর্কতার জিনিসপত্র তুলে দিচ্ছেন রুদ্রনীল ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।
আনলকের এই পর্যায়ে করোনা আবহেও কাজে ফিরছেন সাধারণ মানুষ। সরকার থেকে বার বার বলা হচ্ছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েই বাইরে বেরোতে। কিন্তু এই শহরেই এক শ্রেণির মানুষ রয়েছেন, যাঁদের কোনও রকমে দু’বেলা ভাতের জোগাড় হয়ে গেলেও সেই ন্যূনতম সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য জিনিসপত্র কেনার সামর্থ্য নেই। এমন পরিস্থিতিতে বস্তিতে থাকা সেই মানুষগুলির সাহায্যে এগিয়ে এলেন এই শহরের কয়েক জন মানুষ, কয়েকটি সংস্থা এবং একটি বেসরকারি হাসপাতাল। তারাই ওঁদের হাতে পৌঁছে দেবেন সে সব সামগ্রী। স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন শুক্রবার প্রথম দফায় ওই জিনিসপত্র দেওয়া হল গল্ফগ্রিনের রং কল বস্তির বাসিন্দাদের হাতে।
উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতা শহরে মোট সাড়ে তিন হাজার বস্তি পুরসভায় নথিভুক্ত আছে। সেখানে থাকা ৫ লক্ষ পরিবারের প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের হাতে মাস্ক, স্যানিটাইজার, গ্লাভস, থার্মোমিটার, জ্বরের ওষুধ, ভিটামিন সি ট্যাবলেট, ব্লিটিং পাওডারের মতো সতর্কতামূলক জিনিসপত্র তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। উদ্যোগের নাম ‘জননী: স্বাস্থ্যের স্বাধীনতা’। শুধু তাই নয়, এই বস্তিগুলিতে যদি কেউ করোনা আক্রান্ত হন, তা হলে তাঁকে ওই হাসপাতালে রেখে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবাও দেওয়া হবে। প্রতি মাসে ১৫-২০ জনকে এই পরিষেবা দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ উদ্যোক্তাদের তরফে বলেন, ‘‘নতুন করে স্বাস্থ্যের স্বাধীনতা বিপন্ন করে তুলেছে করোনা। সরকারের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা সেই স্বাধীনতাই ফের ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াই চালাচ্ছি। এ লড়াই আমাদের জিততে হবে। করোনা রুখতে যে যে সাবধানতা প্রয়োজন তা বোঝানোর পাশাপাশি আমরা বস্তিবাসীদের হাতে সেই সংক্রান্ত সমস্ত সামগ্রী তুলে দেওয়ার কাজে ব্রতী হয়েছি।’’
আরও পড়ুন: ‘বিজেপির ষড়যন্ত্র ভেস্তে দিলাম’, আস্থাভোটে জিতে গর্জন গহলৌতের
রাজ্য সরকার নানাবিধ ভাবে এই দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকারের পাশাপাশি ‘জননী: স্বাস্থ্যের স্বাধীনতা’ও ওই বস্তিবাসীদের কাছে পৌঁছে চান উদ্যোক্তারা। রুদ্রনীল বলেন, ‘‘আমরা সকলের কাছ থেকে সাহায্য নিয়েই কাজটা শুরু করেছি। এত বড় একটা উদ্যোগে আরও সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে।’’