আবৃত: কুয়াশায় ঢেকেছে ময়দান। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
পর পর দু’দিন। মঙ্গলবারের পরে বুধবার সকালেও কুয়াশায় ঘিরল কলকাতা বিমানবন্দর। তবে, এ দিন কুয়াশার কারণে কলকাতা থেকে উড়ান চলাচলে তেমন সমস্যা হয়নি। বরং প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের রাজধানী পটনা এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা মঙ্গলবার রাত থেকে ঘন কুয়াশায় মোড়া থাকায় চাপ বাড়ে শহরের উপরে। কলকাতায় একটি আন্তর্জাতিক উড়ানের যাত্রীদের আট ঘণ্টারও বেশি বিমানের ভিতরে অপেক্ষা করতে হয়।
সব চেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন পটনার যাত্রীরা। মুম্বইয়ে চাকরিরত সন্তোষ রজকের বাড়ি মজফ্ফরপুরে। মঙ্গলবার ছিল তাঁর বোনের বিয়ে। সেই কারণে ওই দিন ভোরে মুম্বই-পটনা রুটের উড়ানে টিকিট কেটেছিলেন সন্তোষ। কিন্তু, মুম্বই থেকে সেই উড়ান সকাল সাড়ে ছ’টার পরিবর্তে ছাড়ে ১২ ঘণ্টা দেরিতে, সন্ধ্যা পৌনে সাতটায়! সকাল থেকে উড়ানের দেরি দেখে সন্তোষ মঙ্গলবার দুপুরে পৌঁছেছিলেন বিমানবন্দরে।
দুর্ভোগের সেখানেই শেষ হয়নি। সন্তোষদের নিয়ে সেই বিমান রাতে পটনার আকাশে পৌঁছেও নামতে না পেরে মুখ ঘুরিয়ে কলকাতায় চলে আসে। কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পরে যাত্রীদের রাত একটা নাগাদ বিমানবন্দরের কাছে একটি হোটেলে পাঠানো হয়। এ দিন ভোর সাড়ে পাঁচটায় আবার তাঁদের নিয়ে আসা হয় বিমানবন্দরে। তার পরেও দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষা। অবশেষে পটনাগামী সেই উড়ান গন্তব্যে রওনা হয় বুধবার বেলা ১২টার পরে। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ ঘণ্টার ধকল সইতে হয় যাত্রীদের।
আরও পড়ুন: করোনার প্রকোপে অনিশ্চয়তার মেঘ বই-পার্বণেও
আরও পড়ুন: ‘নিয়ম ভেঙে’ ভূগর্ভস্থ জল তুলে আর্সেনিক মানচিত্রে কলকাতাও
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে বেঙ্গালুরু থেকে গিয়ে পটনায় নামতে না পেরে আর একটি সংস্থার উড়ানও কলকাতায় নামে। তবে রাতেই সেই বিমানটি যাত্রীদের নিয়ে পটনা উড়ে যায়। ওই রাতে কলকাতা থেকে পটনা রওনা হয়েও সেখান থেকে মুখ ঘুরিয়ে ফিরে আসে আরও একটি উড়ান।
অন্তর্দেশীয় উড়ানের পাশাপাশি সমস্যায় পড়েন আন্তর্জাতিক উড়ানের যাত্রীরাও। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঢাকার আকাশে কুয়াশার জন্য মঙ্গলবার রাতে পর পর দু’টি আন্তর্জাতিক উড়ান কলকাতায় এসে নামে। সৌদি আরবের একটি বিমান সংস্থার উড়ান রিয়াধ থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। আর একটি সংস্থার উড়ান যাচ্ছিল শারজা থেকে ঢাকা। ঢাকার আকাশ পরিষ্কার হওয়ার আশায় কিছু ক্ষণ কলকাতায় অপেক্ষা করার পরে রিয়াধ-ঢাকা রুটের উড়ানটি বুধবার ভোরে আবার রিয়াধ ফিরে যায়। কিন্তু, যাত্রীদের বিমানের ভিতরেই বসিয়ে মঙ্গলবার সারা রাত শহরে অপেক্ষা করে সৌদি আরবের দ্বিতীয় উড়ানটি। এ দিন সকালে সেটি ঢাকা রওনা হয়।
মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে ফের কুয়াশার চাদরে মুড়তে শুরু করে কলকাতা বিমানবন্দর। সঙ্গে কমতে থাকে দৃশ্যমানতা। বুধবার সকালে হংকং থেকে একটি পণ্য বিমান কলকাতায় এসেও নামতে না পেরে ভুবনেশ্বর চলে যায়। দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি বিমান শহরে নামতে না পেরে কলাইকুন্ডায় গিয়ে নামে। কুয়াশার জন্য কলকাতা থেকে কয়েকটি উড়ান এ দিন দেরিতে ছেড়েছে বলেও জানা গিয়েছে।