—প্রতীকী চিত্র।
সপ্তাহ দুয়েক আগে মানিকতলা থানার মুরারিপুকুরে এক গৃহধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তাঁর উপরে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছিল শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। তদন্তে নেমে ওই মহিলার ননদকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
তার পরে ফের একই ঘটনা। এ বারের ঘটনাস্থল সেই মানিকতলা থানারই বাগমারি। এক গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। মৃতার নাম টুটু পাইক (২২)। পুলিশ জানিয়েছে, টুটুর বাপের বাড়ি ওই এলাকাতেই। রবিবার সকালে পড়শিদের ফোন পেয়ে টুটুর মা-বাবা মেয়ের শ্বশুরবাড়ি গিয়ে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ওই গৃহবধূকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ঘটনায় টুটুর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
টুটুর শ্বশুরবাড়ির প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বছর দুয়েক আগে টুটু ভালবেসে স্থানীয় যুবক নেপাল পাইককে বিয়ে করেন। দিনমজুর নেপালের তেমন রোজগার ছিল না। তার উপরে ননদ মণিকা বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই ফিরে আসেন বাপের বাড়ি। প্রতিবেশীদের অনেকেরই অনুমান, এতে টুটুর পরিবারের উপরে চাপ আরও বাড়ে। ওই গৃহবধূর বাবা-মা মিলন সরকার ও অমরাবতী সরকারের অভিযোগ, ভালবেসে বিয়ে করার জন্য বিয়ের সময়ে পণ নিয়ে কোনও কথা হয়নি। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য চাপ দিতে থাকে নেপালের পরিবার।
অমরাবতীদেবীর অভিযোগ, পণের জন্য তাঁর মেয়ের উপরে অত্যাচার করা হতো। তিনি বলেন, ‘‘শনিবার বিকেলে মেয়ে ফোন করে বলে, ‘আমাকে নিয়ে যাও। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’ তার পরেই এই ঘটনা।’’ টুটুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনা কেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কেউ জানালেন না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অমরাবতীদেবী ও মিলনবাবু। তাঁদের আরও অভিযোগ, টুটুকে খুন করা হয়েছে।
এ দিনই মানিকতলা থানায় টুটুর শ্বশুর অনিরুদ্ধ পাইক, শাশুড়ি আঙ্গি পাইক, স্বামী নেপাল ও ননদ মণিকা পাইকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর মা-বাবা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে চার জনকেই গ্রেফতার করা হয়। শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হলে তাঁদের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
টুটুর কয়েক মাসের একটি সন্তান রয়েছে। সেই সন্তানকে কী ভাবে তাঁরা লালন করবেন, সেটাই এখন চিন্তা মিলন ও অমরাবতী সরকারের।