ফাইল ছবি
মাত্র আধ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতেই ফের ভাসল কলকাতা শহরের একাংশ। শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত শহরের একাধিক জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হয়। কোথাও ভারী, কোথাও বা হালকা। এর মধ্যে দুপুরের দিকে একনাগাড়ে আধ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে মধ্য কলকাতার মহাকরণ, লালবাজার ও ধর্মতলা এলাকার বিভিন্ন রাস্তা জলে ডুবে যায়। জল সরতে বেশ কিছু ক্ষণ সময় লাগে। প্রশ্ন উঠেছে, আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতেই যদি রাস্তাঘাটের এই অবস্থা হয়, তা হলে আরও বেশি ক্ষণ বৃষ্টি হলে কী ভাবে?
পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন অল্প কিছু ক্ষণের বৃষ্টিতে ধর্মতলা সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহকে ফোন করেন। মেয়রের ফোন পেয়ে ওই সমস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন তারক।
পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বিভিন্ন নিকাশি পাম্পিং স্টেশন সূত্রে পাওয়া বৃষ্টিপাতের খতিয়ান বলছে, উত্তরের তুলনায় দক্ষিণে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। মানিকতলায় বৃষ্টি হয়েছে ১১ মিলিমিটার, বীরপাড়ায় পাঁচ মিলিমিটার, বেলগাছিয়ায় ২৬ মিলিমিটার, ধাপায় ৮ মিলিমিটার ও তপসিয়ায় ১৪ মিলিমিটার। সব চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে চেতলায় ও বালিগঞ্জে। দু’জায়গাতেই৫৯ মিলিমিটার করে। কালীঘাটে বৃষ্টি হয়েছে ৪০.৬০ মিলিমিটার। এ দিনের অল্প সময়ের বৃষ্টির পরে দেখা যায়, ধর্মতলা চত্বরের একাধিক রাস্তা জলে থইথই। আকাশবাণীর সামনেও দীর্ঘক্ষণ জল জমে ছিল। ধর্মতলা থেকে পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুল পর্যন্ত যাওয়ার গোটা রাস্তাও ছিল জলমগ্ন। ওই এলাকার একটি হোটেলের সামনেও দীর্ঘক্ষণ জল জমে থাকায় ফুটপাত দিয়ে চলাফেরা করতে গিয়ে বেশ বেগপেতে হয় সাধারণ মানুষকে। অনেককেই পায়ের জুতো হাতে নিয়ে হাঁটতে দেখা যায়। রাস্তা জলমগ্ন থাকায় তৈরি হয় যানজট। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ে জলজমে থাকায় সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। আকাশবাণীর দিক থেকে কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটে আসার রাস্তাতেও জল জমে থাকায় সেখানে গাড়ি দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে।
এ দিন জল সরতে বিকেল গড়িয়ে যায়। বিরোধীদের অভিযোগ, চলতি বর্ষার মরসুমে এখনও একনাগাড়ে বহুক্ষণ ধরে ভারী বৃষ্টি হয়নি। তাতেই যদি শহরের এমন হাল হয়, তা হলে বোঝাই যাচ্ছে, নিকাশির কোনও কাজই করা হয়নি। কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের অভিযোগ, ‘‘বছরভর নিকাশি নালা থেকে পলি তোলার কাজ ঠিক মতো না হওয়ায় শহরবাসীকে ভুগতে হচ্ছে। কিছু ক্ষণের বৃষ্টিতেই স্ট্র্যান্ড রোড ও মহাকরণের আশপাশের রাস্তায় যে ভাবে জল জমেছিল, তেমনটা অতীতে কখনও দেখিনি। বিষয়টি নিয়ে আগেও পুরসভার অধিবেশনে সরব হয়েছিলাম।’’
পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ এ বিষয়ে বলেন, ‘‘শুক্রবার ধর্মতলায় অল্প সময়ের মধ্যে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সেই কারণেই ধর্মতলা সংলগ্ন একাধিক রাস্তায় জল জমে গিয়েছিল। পাশাপাশি, এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত গঙ্গায় জোয়ারের জন্য লকগেটগুলি বন্ধ থাকায় বৃষ্টির জল দেরিতে সরেছে।’’ মহাকরণ এলাকায় জল জমায় সেখানকার গালিপিটগুলি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে জানান তারক।