— ফাইল চিত্র
কর্তৃপক্ষ ও কর্মীদের সংঘাতের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ঠাকুরপুকুর থানা এলাকার জোকার গুরুসদয় সংগ্রহশালার দরজা। গত ২৯ অগস্ট থেকে তালা পড়ে গিয়েছে সেখানে। ফলে ৫০ বছরেরও বেশি পুরনো ওই সংগ্রহশালার ভিতরে থাকা প্রায় চার হাজারের বেশি শিল্পকর্মের রক্ষণাবেক্ষণ কী ভাবে হবে, উঠেছে সেই প্রশ্ন। সংশয় দেখা দিয়েছে সেই সব শিল্পকর্মের নিরাপত্তা নিয়েও।
সংগ্রহশালা সূত্রের খবর, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কর্মীদের মতবিরোধ শুরু হয় কয়েক মাস আগেই। সেখানকার কিউরেটর বিজন মণ্ডল জানান, গত ২৯ অগস্ট তিনি অবসর নেওয়ার পরে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নতুন করে নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে তিনি দেখেন, সংগ্রহশালা ও তাঁর ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন কর্মীদেরই একাংশ। বিজনবাবু বলেন, ‘‘নতুন করে নিয়োগপত্র পেয়েও আমি সংগ্রহশালায় ঢুকতে পারিনি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরে আমি কর্মীদের বিরুদ্ধে ঠাকুরপুকুর থানায় এফআইআর দায়ের করেছি।’’
অন্য দিকে, কর্মীদের অভিযোগ, সংগ্রহশালাটি আগে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এখন তা নেই। তাঁদের বেতনও বন্ধ গত ১৯ মাস ধরে। তাঁদের দাবি, কয়েক জন ব্যক্তি এখন নিজেদের ইচ্ছেমতো ওই প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। নিয়মকানুন কার্যত কিছুই মানা হচ্ছে না। সংগ্রহশালার গ্যালারি অ্যাসিস্ট্যান্ট চূড়ামণি হাটি বলেন, ‘‘১৯ মাস ধরে বেতনহীন কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন কিউরেটর বিজনবাবু। এর প্রতিবাদ করছি আমরা। তবে গেটে আমরা প্রথমে তালা ঝোলাইনি। প্রথমে তালা লাগিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ওঁরা তালা লাগানোর পরে আমরাও একটি তালা লাগিয়েছি।’’ চূড়ামণিবাবু জানান, তাঁদের দাবি, গুরুসদয় সংগ্রহশালা সরকারি নিয়ন্ত্রণে চলুক। একমাত্র তা হলেই ওই সংগ্রহশালা সুরক্ষিত থাকবে। উপরতলার ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ বন্ধ হোক, এমন দাবিও তুলেছেন তাঁরা। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সব কিছু নিয়ম মেনেই চলছে। কোনও রকম স্বেচ্ছাচারিতার প্রশ্নই নেই।
১৯৬৩ সালে বাংলার ব্রতচারী সমিতি ওই সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠা করে। প্রথমে সেটি ব্রতচারী সমিতির অধীনেই ছিল। পরে চুক্তির ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে যায়। তবে কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ২০১৭ সালে সেই চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের নানা রকম শিল্পকলার নিদর্শন রয়েছে ওই সংগ্রহশালায়।