—প্রতীকী ছবি।
গত বছর রাজ্যে আতঙ্ক বাড়িয়েছিল ডেঙ্গি। ২০২২ সালে শুধু কলকাতাতেই ডেঙ্গিতেআক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ২০১৯ সালকে টেক্কা দিয়েছিল। এ বার বর্ষা শুরু হতেই তাই আতঙ্কিত শহরবাসীর প্রশ্ন, মশাবাহিত রোগের দাপট গত বছরের মতো কি এ বারেও অব্যাহত থাকবে? যদিও কলকাতাপুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মশাবাহিত রোগ দূর করতে প্রতিটি ওয়ার্ডের বাড়ি ও তার আশপাশে জল জমা রুখতে পুর স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত পরিদর্শনে যাচ্ছেন। ফলে, এ বছর ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে তাঁদের আশ্বাস।
গত বছরে ১ জানুয়ারি থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত কলকাতা পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬০৫২। সরকারি হিসাবে১১ জনের মৃত্যু হলেও বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। ২০২২ সালে উত্তর কলকাতার১-৭ নম্বর বরো এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪২৫। দক্ষিণের ৮-১৪ নম্বর বরোএলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৬২৭। অর্থাৎ, দক্ষিণে ডেঙ্গির সংক্রমণ ছিল অনেক বেশি। পুরসভা জানিয়েছিল, উত্তরের তুলনায় দক্ষিণ কলকাতায় খালি জমি-সহনির্মীয়মাণ বাড়ি, পুকুর, কুয়োর সংখ্যা তুলনায় বেশি থাকায় ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশার প্রাদুর্ভাব বেড়েছিল।
পুর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উত্তর কলকাতায় খালি জমি৩৮৩টি (১.৯%)। দক্ষিণ কলকাতায় খালি জমির সংখ্যা ৩০৩৮টি (৭৮.৮%)। মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে বছরভর কাজ করে ভেক্টর কন্ট্রোল বিভাগ। ওই বিভাগ দক্ষিণকলকাতায় ফাঁকা জমি, পুকুর, পরিত্যক্ত বাড়ি ইত্যাদিতে মশার লার্ভা যাতে জন্মাতে না পারে, সে দিকে এখন নজরদারি রাখছে বলে দাবি পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের। বিভাগীয় একআধিকারিকের কথায়, ‘‘মশাবাহিত রোগ ঠেকাতেনাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। বাড়ির আশপাশে জল জমতে দিলে চলবে না।’’ সংশ্লিষ্ট দফতরের দাবি, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নিয়মিত ওয়ার্ডগুলিতে ডেঙ্গিসচেতনতায় মাইকিং, লিফলেট বিলি হয়েছে।
পুরসভার চিকিৎসকদের বক্তব্য, বিশ্বের সব চেয়ে পরিচ্ছন্ন এবং সবুজ শহর সিঙ্গাপুরেও প্রতিবছর প্রচুর মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্তার মতে, ‘‘সবার সম্মিলিত সচেতনতাতেই মশাবাহিত রোগ সম্পূর্ণ দূরীকরণ সম্ভব। কোথাও মশার লার্ভা জন্মাতে দিলেচলবে না।’’