কোনও কোনও জেলায় ছানি অস্ত্রোপচারের হার ১০০ শতাংশ পেরোলেও সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অনেক পিছিয়ে রয়েছে বেসরকারি হাসপাতালের থেকে। প্রতীকী ছবি।
কোথাও জেলার সামগ্রিক সাফল্যের হার খুব ভাল। কিন্তু বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তুলনায় সরকারি হাসপাতালের সাফল্যের আনুপাতিক হার অনেক কম। কোথাও আবার মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা তাঁদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণই করতে পারেননি। ছানি অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে এমনই পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে স্বাস্থ্যকর্তাদের বৈঠকে।
পর্যবেক্ষণে তিনটি বিষয় স্পষ্ট। তা হল, কোনও কোনও জেলায় ছানি অস্ত্রোপচারের হার ১০০ শতাংশ পেরোলেও সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অনেক পিছিয়ে রয়েছে বেসরকারি হাসপাতালের থেকে। যেমন, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান ও পুরুলিয়া। অন্য দিকে, বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা, রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা, ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলা, নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা, বীরভূম, কালিম্পং ও দুই দিনাজপুরের মতো জেলাগুলিতে সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মিলিয়েও ছানি অস্ত্রোপচারের হার তলানিতে। লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশও পূরণ হয়নি। সেখানে মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু চিকিৎসকেরা প্রতি মাসের লক্ষ্যমাত্রা থেকেও অনেক পিছিয়ে।
চিকিৎসক-পিছু মাসে ৩০টির লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অনেক পিছিয়ে আর জি কর, পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ, কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ, ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ, কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ, বর্ধমান ও রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ। সম্প্রতি জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক ও মেডিক্যাল কলেজের সুপারদের সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টির পাশাপাশি ছানি অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সমস্যার কথাও উঠেছে। দরপত্র ডেকেও বহু যন্ত্রের বরাত দেওয়াই হয়নি কোনও সংস্থাকে। স্লিট ল্যাম্প (৩৮টি), ডিরেক্ট অপথ্যালমোস্কোপ (১৮৫টি), ফেকো ইমালসিফিকেশন (২১টি)-সহ আরও কয়েকটি যন্ত্রের দরপত্র ডাকাই হয়নি। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “সরকারি হাসপাতালে ছানি অস্ত্রোপচারের সংখ্যা যাতে বাড়ে, সে দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে।” প্রাক্তন সরকারি চক্ষু চিকিৎসক হিমাদ্রি দত্ত বলেন, “ঘরে বসে লক্ষ্যমাত্রা দিলেই চলবে না। সরকারি হাসপাতালে ছানি অস্ত্রোপচারের রোগীই আসছেন না। সে দিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।” তিনি জানান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করিয়ে ফিরিয়ে দিয়ে যায়। বেসরকারিতে এখন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পেও অস্ত্রোপচার হচ্ছে। তাই সরকারিতে রোগীরা আসেন না।