সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ২০টি হাসপাতালে মায়ের ডায়ালিসিসের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়েছে মধ্যমগ্রামের এক বাসিন্দাকে—নিজস্ব চিত্র
অ্যাম্বুল্যান্সে ডায়ালিসিসের রোগী। ওই অবস্থাতে মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে একের পর এক হাসপাতালের দরজায় কড়া নেড়েও মিলল না সাড়া। কেউ রেফার করল অন্য হাসপাতালে, কোথাও আবার জানিয়ে দেওয়া হল, কোভিড-১৯ টেস্ট না হয়ে থাকলে ডায়ালিসিস করা যাবে না। গত রবিবার থেকে সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ২০টি হাসপাতালে মায়ের ডায়ালিসিসের জন্য এ ভাবেই হন্যে হয়ে ঘুরে বেরাতে হয়েছে মধ্যমগ্রামের এক বাসিন্দাকে। আদৌ মায়ের ডায়ালিসিস করানো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন ওই যুবক।
এখন রাজ্যের অধিকাংশ হাসপাতালেই করোনা চিকিৎসা চলছে। রোগী ভর্তির সংখ্যাও বাড়ছে। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠছিল, অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু সেই সমস্যার কারণে যে মায়ের ডায়ালিসিস হবে না, তা ভাবতে পারেননি ওই যুবক। তাঁর মায়ের বয়স সত্তরের উপর। ওই বৃদ্ধা গত ১০ বছর ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। গত তিন বছর ধরে শারীরিক সমস্যা আরও বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এবং আজ বুধবার ডায়ালিসিস না হওয়ায় তাঁর জটিলতা আরও বেড়েছে।
সরকারি হাসপাতালগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলো তাঁর ডায়ালিসিসের আগে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট চেয়েছে। কিন্তু, ওই যুবকের মায়ের সেই সংক্রান্ত কোনও পরীক্ষা হয়নি। গত রবিবার থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল ফিরিয়ে দেওয়ার পর ওই যুবক যোগাযোগ করেছিলেন রাজ্য সরকারের কোভিড-১৯ কন্ট্রোল রুমের নম্বরে। কিন্তু ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২ বা ০৩৩-২৩৪১২৬০০-সহ অনেকগুলি নম্বরে ফোন করেও তিনি কোনও সাড়া পাননি বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের আরও এক চিকিৎসক
গত তিন বছর ধরে চিনার পার্কের কাছে ভিআইপি রোডের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সপ্তাহে তিন দিন মায়ের ডায়ালিসিস করাতেন ওই যুবক। কিন্তু ওই হাসপাতালে এক রোগীর করোনা ধরা পড়ে সম্প্রতি। তার পর থেকে আপাতত ওই হাসপাতাল বন্ধ। পরবর্তীতে আরও কয়েক জন রোগী, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা ধরা পড়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওই যুবক যোগাযোগ করলেও, কবে থেকে সেখানে পরিষেবা চালু হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি তাঁরা।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের আরও এক চিকিৎসক
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি সংস্থার কর্মী ওই যুবক জানান, “যেখানে মায়ের ডায়ালিসিস করানো হত, সেই হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, কলকাতার প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘোরা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেউ ডায়ালিসিস করাতে রাজি হয়নি। সরকারি হাসপাতাল থেকে একের পর এক জায়গায় রেফার করা হয়েছে। কিন্তু তা-ও ভর্তি নেওয়া হয়নি।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)