—প্রতীকী ছবি।
পরিকল্পনা মাফিক বদলে ফেলেছিল নাম। জমা দেওয়া ঠিকানাও ছিল ভুয়ো। তাতেও শেষরক্ষা হল না। অসতর্ক মুহূর্তে তোলা একটি ছবি ধরিয়ে দিল চুরিতে অভিযুক্ত এক পরিচারিকাকে।
লক্ষাধিক টাকার গয়না এবং টাকা চুরির অভিযোগে শেফালি রায় ওরফে শোভা রায় নামে ওই পরিচারিকাকে মঙ্গলবার বাগবাজার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে চুরি যাওয়া কিছু টাকা-গয়নাও। বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজত দেন।
আয়া সেন্টার থেকে বাড়ির কাজের জন্য পরিচারিকা নেওয়ার চাহিদা বিপুল এ শহরে। কিন্তু অভিযোগ, সেন্টারগুলি বিভিন্ন সময়েই নাম-ঠিকানা যাচাই না করে কাজে নিয়োগ করে তাঁদের। শ্যামপুকুরের যে সেন্টার থেকে ওই পরিচারিকাকে নেওয়া হয়েছিল, সেখানেও তেমনটাই করা হয়েছিল বলে দাবি পুলিশের।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা পিয়ালি স্প্রিঙ্গার শ্যামপুকুর থানায় অভিযোগ করেন, তাঁর বাহাত্তর বছর বয়সি মা, অর্চনা সেন থাকেন ভূপেন বসু অ্যাভনিউয়ে। কিছু দিন আগে বাবা মারা গিয়েছেন। তখনই শহরে এসেছেন তিনি। অসুস্থ অর্চনাদেবীকে রাতে দেখভালের জন্য স্থানীয় একটি আয়া সেন্টার থেকে মাস খানেক আগ ওই পরিচারিকাকে পাঠানো হয়েছিল। রাত আটটা থেকে সকাল ন’টা পর্যন্ত ওই পরিচারিকার কাজ করার কথা। কিন্তু দিন সাতেক ধরে সে আর আসছে না। উল্টে ঘরের ভিতরে আলমারিতে থাকা সোনার গয়না ও টাকা উধাও।
তদন্তকারীরা জানান, আয়া সেন্টার থেকে ওই পরিচারিকাকে নিয়োগ করা হলেও তার নাম-ঠিকানা দু’টিই ছিল ভুয়ো। ফলে আয়া সেন্টারে গিয়েও তেমন কোনও উপকার হয়নি তদন্তকারীদের। এর মধ্যেই পুলিশ ওই পরিচারিকার একটি ছবি পায়। সেটি অভিযোগকারীর বাবা মারা যাওয়ার সময়ে তোলা হয়েছিল। ভিড়ের মাঝে থাকা ওই পরিচারিকার ছবি পুলিশ এলাকার বিভিন্ন জায়গায় পাঠায়। তাতেই জানা যায়, ওই মহিলার নাম শোভা নয়, তার আসল নাম শেফালি। বাড়ি বাগবাজারের কাছে সরকার বাড়ি লেনে। এর পরেই পুলিশ সেখানে গিয়ে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের দাবি, পরিকল্পনা করেই ওই বাড়িতে কাজে যোগ দিয়েছিল ধৃত মহিলা। তাই নিজের নাম-ঠিকানা সবই ভুয়ো দিয়েছিল সেখানে। অভিযোগকারীর বক্তব্য, কাজে যোগ দিয়ে প্রথমে বাড়ির সকলের বিশ্বাস অর্জন করেছিল ওই মহিলা। পরে সেই বিশ্বাসের সুযোগ নিয়েই ধীরে ধীরে গয়না সরাতে থাকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, কিছু দিন ধরে অভিযোগকারী মায়ের সঙ্গে ওই পরিচারিকাকে রেখে দমদমের এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকছিলেন। হঠাৎ ওই পরিচারিকা কিছু না জানিয়ে কাজে আসা বন্ধ করে দিলে সন্দেহ হয় ওই বাড়ির বাসিন্দাদের। তখনই বাড়ির আলমারি খুলে তল্লাশি শুরু করেন ওঁরা।
সে সময়ে খেয়াল করেন, অনেক গয়না উধাও। নেই টাকাও। এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন পিয়ালি।