প্রতীকী ছবি।
রাজ্য পরিবহণ নিগমের অধীনে থাকা বাসের হদিস দেবে গুগল। শহরের যে কোনও বাসস্টপে দাঁড়িয়ে ইংরেজিতে বাস বিটুইন লিখে গন্তব্যের নাম এবং নির্দিষ্ট স্টপের নাম লিখে সার্চ করলেই জানা যাবে সংশ্লিষ্ট বাসের সময় এবং অবস্থান। এর জন্য কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করার প্রয়োজন পড়বে না বলে নিগম সূত্রের খবর। মে মাসের মাঝামাঝি থেকে এই সুবিধা চালু হয়ে যাবে।
এর আগে ২০১৭ সালে বাসের হদিস দিতে ‘পথদিশা’ অ্যাপ চালু করেছিল রাজ্য পরিবহণ নিগম। ওই অ্যাপে জিপিএস প্রযুক্তির সাহায্যে বাসের অবস্থান এবং তা আসার সম্ভাব্য সময় জানা যেত। কিন্তু, বাসের মধ্যে বসানো জিপিএস যন্ত্র নিয়মিত চার্জ দেওয়া ছাড়াও সেটির ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা ছিল। এ ছাড়াও ওই প্রযুক্তির নিজস্ব কিছু সীমাবদ্ধতাও ছিল। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, প্রায়ই অ্যাপে দেখানো অবস্থানের তুলনায় বাস পাওয়া যেত আরও বেশি আগে। অনেক ক্ষেত্রে আবার নির্দিষ্ট স্টপ ছাড়িয়ে বাস কিছুটা চলে যাওয়ার পরে যাত্রীরা বুঝতে পারতেন, নির্ধারিত সময়ের খানিক আগেই তা এসে চলে গিয়েছে। ফলে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা এবং কিছুটা প্রয়োগের ত্রুটি— এই দুইয়ের কারণে ওই অ্যাপ শুরুতে জনপ্রিয়তা পেলেও পরে ধীরে ধীরে গুরুত্ব হারায়।
পরিবহণ নিগম সূত্রের খবর, এ বার নতুন ব্যবস্থায় গুগল ম্যাপের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। বাসের কন্ডাক্টরদের কাছে থাকা ইলেক্ট্রনিক টিকেটিং মেশিন সিস্টেমেই নতুন ওই যন্ত্র বসানো থাকবে। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজনবীর সিংহ কপূর বলেন, ‘‘নতুন ব্যবস্থা বাসের অবস্থান জানানোর পাশাপাশি টিকিট কাটার ব্যবস্থার উপরেও নজর রাখবে।’’ এই পরিকল্পনা রূপায়ণে গুগল ম্যাপের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থার কর্তা বিজয় ধাতওয়ালিয়া বলেন, ‘‘নতুন ব্যবস্থায় যাত্রীরা অনেক সহজে বাসের খোঁজ পাবেন। পাশাপাশি এই ব্যবস্থা আয় বাড়াতেও সাহায্য করবে।’’
নিগম সূত্রের খবর, প্রত্যেক বাসের জন্য নির্দিষ্ট পিওএস (পস) মেশিন রয়েছে। তার সঙ্গেই নতুন ব্যবস্থা যুক্ত হবে। তবে নতুন এই প্রযুক্তিতেও পুরনো অসুখ আদৌ সারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। সম্প্রতি নিউ টাউনে নির্ভুল ভাবে বাসের সময় এবং অবস্থান জানাতে জিপিএস ছাড়াও আরএফআইডি ট্যাগ ব্যবহার করার কথা ভাবা হয়েছে। কিন্তু গুগল ম্যাপ যে ভাবে কাজ করে, তাতে চালু হতে চলা এই নতুন ব্যবস্থায় আংশিক তারতম্যের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। যদিও আলাদা করে অ্যাপ ডাউনলোড করতে না হওয়ার বিষয়টি বাড়তি সুবিধার। যাত্রীদের একাংশ অবশ্য রাস্তায় বাসের সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পরিবহণ দফতরের দাবি, ব্যাটারিচালিত বাসের সংখ্যা বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে। খুব তাড়াতাড়ি শহরের পথে এক হাজার বৈদ্যুতিক বাস নামানোর চেষ্টা চলছে।