Women Trafficking

Women Traffick: পাচার রোধে পড়শি রাজ্যেও ভরসা ‘স্বয়ংসিদ্ধা মডেল’

আসার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে আসতে পারেননি রাজ্যের শিশু ও নারী কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২২ ০৬:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

সুদূর গোয়ায় ‘ভাল ঘরে’ মেয়েটার বিয়ের প্রস্তাব আসায় খুশি হয়েছিলেন মেটিয়াবুরুজের দম্পতি। কিন্তু মেয়ে নিজেই মা-বাবার চোখ খুলে দিয়ে বোঝাল, কী ভুল তাঁরা করতে চলেছিলেন। মেটিয়াবুরুজের রবীন্দ্র বালিকা বিদ্যাপীঠের স্বেচ্ছাসেবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু পরিবারের মেয়ে এই ‘স্বয়ংসিদ্ধা’র কথা সগর্বে বলছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দূর্বা ভট্টাচার্য। তিনি দেখেছেন, বিয়ের ছুতোয় পাচারের ফাঁদের বিপদ। অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পাচার-প্রবণ এলাকায় এই ছাত্রীরাই চেতনার আলোকশিখা হয়ে ফুটে উঠেছে।

Advertisement

শুক্রবার আমেরিকান কনসুলেটের পাচার-বিরোধী কনক্লেভে এই সাহসী মেয়েরাই ভরসা জোগাল পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ঝাড়খণ্ড, বিহারের সমাজকর্মী থেকে সরকারি কর্তা— সবাইকে। পাচার রোধে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্কুল স্তরে সক্রিয় সচেতনতা প্রকল্প ‘স্বয়ংসিদ্ধা’র মতো উদ্যোগকেই এই আসরে ‘মুশকিল-আসান’ বলে মেলে ধরলেন পোড়খাওয়া সমাজকর্মীরা। আমেরিকান সেন্টারের তরফে এ দিনও পাচার রোধে ‘একা থেকে এক হওয়া’র মন্ত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই কর্মকাণ্ডের শরিক শক্তিবাহিনী মঞ্চের অন্যতম মুখ ঋষিকান্ত বলছিলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের দুই ২৪ পরগনার দেখাদেখি বিহারের সীতামঢ়ী, ঝাড়খণ্ডের সিমডেগা বা অসমের মোরিগাঁও জেলা প্রশাসনও স্কুল স্তরে পাচার রোধের সচেতনতা গড়ে তুলেছে।’’

আসার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে আসতে পারেননি রাজ্যের শিশু ও নারী কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। তবে এ রাজ্যে ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ প্রকল্প রূপায়ণের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ মুখ, অধুনা রাজ্য পুলিশের এডিজি অজেয় রানাডে বললেন, ‘‘ঘরের মেয়েদের ভয়ানক বিপদ থেকে বাঁচানোর তাড়নাই পুলিশকে পাচার রুখতে কিছুটা সঙ্কল্পবদ্ধ করে তোলে। স্কুলশিক্ষক থেকে পঞ্চায়েত সদস্য, সবাইকে নিয়েই পাচার রোখার চেষ্টা সামাজিক আন্দোলনের রূপ পেয়েছিল।’’ কলকাতার আমেরিকান কনসাল জেনারেল মেলিন্ডা পাভেকও বলেন, ‘‘পাচারের মতো বিশ্বব্যাপী অপরাধ-চক্রের মোকাবিলা একা করা সম্ভব নয়। এই লড়াইয়ে ভারত ও আমেরিকা বহু দিনের শরিক।’’

Advertisement

আলোচনায় উঠে এসেছে, অতিমারি ও ঘূর্ণিঝড়ের ফলে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক সঙ্কটে এ রাজ্যে পাচারের বিপদ আরও বেড়ে গিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারও ২০২০-র জুলাইয়ে নির্দেশিকা পাঠিয়ে সতর্ক করে। তখনই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও শিশু সুরক্ষা কমিশন সক্রিয় হয়। পাশে ছিল আমেরিকান কনসুলেট। পাচার হওয়া মেয়েদের পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি থেকে উদ্ধার করে শক্তিবাহিনী। অতিমারি পরিস্থিতিতেও পুলিশের মধ্যে আন্তঃরাজ্য সহযোগিতা চালু হয়।

অতিমারির দ্বিতীয় বছরে পশ্চিমবঙ্গে ৪০ লক্ষ মানুষের কাছে সচেতনতার বার্তা পৌঁছেছে। অন্তত ২৫০টি ঘটনায় ৮৯ জনকে রক্ষাও করা গিয়েছে। দু’দিনের এই কনক্লেভ পাচার মামলায় সুবিচারের লড়াইয়ের সমস্যা ও ইন্টারনেট, সমাজমাধ্যমে পাচারের ফাঁদ নিয়েও আলোচনা করবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement