জালের এই ফাঁক গলেই পড়ে যায় অঞ্জলি দাস(ইনসেটে)। — নিজস্ব চিত্র
বস্তি সংলগ্ন এলাকায় নির্মাণকাজের জন্য চৌবাচ্চার মতো কিছু জলাধার তৈরি করেছিল পূর্ত দফতর। কাজ শেষ হয়ে গেলেও জলাশয়গুলি এখনও খোলা অবস্থায় ফেলে রেখেছে তারা। উপরে লোহার জাল থাকলেও তাতে রয়েছে বড় ব়ড় ফাঁক। শনিবার দুপুরে এমনই একটি জলাধারের লোহার জাল গলে পড়ে গিয়ে মারা গেল ন’বছরের এক বালিকা। পুলিশ জানায়, শিশুটির নাম অঞ্জলি দাস।
কী ঘটেছিল এ দিন?
পুলিশ সূত্রের খবর, অঞ্জলির পরিবার ও পড়শিরা তাদের জানিয়েছেন, বছরখানেক আগে অঞ্জলির মা মারা যাওয়ার পর থেকে সে ১/১ থ্যাকারে রোডে দাদু-দিদিমার সঙ্গে থাকত। এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ অঞ্জলি বাড়ির পাশের টাইম কলে স্নান করার জন্য বেরোয়। তার পরে সময় গড়িয়ে গেলেও সে বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ ধরে খোঁজার পরে শেষে বাড়ির সামনে পূর্ত দফতরের পরিত্যক্ত খোলা জলাধারের ভিতরে অঞ্জলিকে ভাসতে দেখা যায়। পরিবার ও পাড়ার লোকজন সঙ্গে সঙ্গে তাকে জলাধার থেকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা অঞ্জলিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, পূর্ত দফতর ওই এলাকায় ভূগর্ভে নিকাশি নালা তৈরির কাজ করেছিল। আশপাশে বসতি এলাকা রয়েছে। তা সত্ত্বেও কাজের পরে জলাধারগুলি না বুজিয়ে খোলা অবস্থায় ফেলে রেখে গিয়েছে তারা। অভিযোগ, শুধু একটি নয়, এই এলাকায় রাস্তার ধারে বেশ কয়েকটি খোলা জলাধার ও ম্যানহোল রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এর আগেও এলাকার একটি শিশু অন্য একটি খোলা ট্যাঙ্কে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সে সময়ে আশপাশের লোকজন সঙ্গে সঙ্গে তাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোয় সে যাত্রায় শিশুটি বেঁচে গিয়েছিল। ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারাই ওই ট্যাঙ্কের উপরে লোহার জাল দিয়ে ঢাকা দিয়ে দেন। খোলা ম্যানহোলগুলিও ইট-পাথর দিয়ে সাময়িক ভাবে বুজিয়ে দেওয়া হয়।
পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, এই এলাকাটি আলিপুর বিভাগের আওতায় পড়ে। তাদের দাবি, জলাধারগুলি অনেক পুরনো। পূর্ত দফতরই এক সময়ে সেগুলি তৈরি করেছিল। কিন্তু সেখানে একের পর এক অফিসার-সহ ইঞ্জিনিয়ার বদলি হওয়ায় সব কাজ ঠিক মতো দেখভাল হচ্ছে না। তবে শীঘ্রই সব ম্যানহোল এবং জলাধার ভরাট করে দেওয়া হবে। এ দিকে ঘটনার পরে পুলিশ শিশুটির দেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।