বাবা-মায়ের সঙ্গে রূপকথা পোলাই।
ডেঙ্গিতে কলকাতা শহরেই ফের এক শিশুর মৃত্যু হল। আর সেই মৃত্যু চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল। ঘটনাচক্রে মৃত শিশুর বাবা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত। ওই শিশুর মৃত্যু নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে পুরসভার অন্দরেই।
মৃতের নাম রূপকথা পুলাই। সে পাঠভবন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। গত পাঁচ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রূপকথা। বুধবার ইএম বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, “শুনেছি জ্বরে মারা গিয়েছে। ঠিক কী হয়েছে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”
পুরসভা সূত্রে খবর, রূপকথার জ্বর পাঁচদিন আগে হলেও, তার ঠিক মতো চিকিৎসা হয়নি। রক্ত পরীক্ষাও দেরি করে হওয়ায় ডেঙ্গি ধরা পড়েছে অনেক পরে। প্রথম থেকে ঠিক মতো চিকিৎসা হলে এ রকম ঘটনা ঘটত না বলে দাবি করেছেন পুরসভার কেউ কেউ। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ মৃত ছাত্রীর পরিবার।
আরও পড়ুন: ছ’দিন জ্বরে ভুগে মৃত্যু দমদমের স্কুলছাত্রের
ডেঙ্গি প্রসঙ্গে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে বিরোধীরা প্রথম থেকেই সরব। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপির অভিযোগ, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে তথ্যগোপন করছে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড। রূপকথার মৃত্যুতেও চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই শিকার করা হচ্ছে না, কলকাতায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েই চলেছে।পুরসভা সূত্রে খবর, এ পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গিতে ছ’জন মারা গিয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে দ্বিমত থাকলেও, তা দেড় হাজারের কম নয়। সম্প্রতি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডে এক জনের মৃত্যু (এনএস-১ পজিটিভ) হতেই ডেঙ্গি সংক্রান্ত বৈঠক হয় পুরসভায়। ডেঙ্গি মোকাবিলা নিয়ে জরুরি বৈঠকে বেশ কিছু সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: খোঁজ নেই বাজি কারখানার অভিযুক্তদের
মুখে স্বীকার না করলেও, এ বার ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ে নাস্তানাবুদ পুর প্রশাসন। কীভাবে তা মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়েও ওই বৈঠকে আলোচনা হয়। তবে কতজন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন, এ প্রসঙ্গ উঠলেই পুর কর্তারা আশ্চর্যজনকভাবে নীরব হয়ে যান বলে অভিযোগ বিরোধীদের। রূপকথার মৃত্যুতেও একই ঘটনা ঘটেছে।