উদ্ধার হওয়ার পরে শিশুকন্যা। বৃহস্পতিবার, বেলুড়ে। নিজস্ব চিত্র
রেল লাইনের ধারে ঝোপ থেকে সকাল থেকেই ভেসে আসছিল মৃদু কান্নার আওয়াজ। প্রথমে কেউই বুঝতে পারেননি। ভেবেছিলেন, কোনও বিড়াল বাচ্চার কান্না। কিন্তু বেলা বাড়তে কান্নার আওয়াজ শুনে এগিয়ে যেতেই দেখা গেল বিড়াল নয়, পড়ে রয়েছে একটি শিশু।
বৃহস্পতিবার সকালে বেলুড় খামারপাড়ায় রেল লাইনের ধার থেকে এ ভাবেই উদ্ধার হল এক শিশুকন্যা। পুলিশ জানায়, অজ্ঞাতপরিচয় ওই শিশুটির বয়স ৫-৬ মাস। রেল রক্ষী বাহিনী তাকে হাওড়া চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বেলুড় ও লিলুয়া স্টেশনের মাঝখান দিয়ে একটি আলাদা লাইন চলে গিয়েছে বেলুড় মঠ স্টেশনের দিকে। লাইনের পাশে রয়েছে ঝোপঝাড়। সেখানেই আরপিএফ পোস্টের পাশে ঝোপ থেকে এ দিন ভোরে কান্নার আওয়াজ শুনতে পান পথচারীরা। প্রথমে কেউই তেমন আমল দেননি। কিন্তু বেলা গড়াতে কান্নার আওয়াজও বাড়তে থাকে। তখন পথচারীরা গিয়ে দেখেন, লাল কাপড়ে মোড়া একটি পুঁটলি পড়ে রয়েছে। তার ভিতর থেকেই আসছে কান্নার আওয়াজ। পুঁটলি খুলতেই দেখা যায় খালি গা, দু’হাতে লোহার বালা ও কপালে কাজলের টিপ পরানো, গলায় কালো সুতোর মধ্যে মাদুলি ঝোলানো এক কন্যাসন্তান। সারা গায়ে ছেঁকে ধরেছে লাল পিঁপড়ে। তাদের কামড়ের যন্ত্রণাতেই কাঁদতে শুরু করেছিল শিশুটি।
খবর পেয়ে জড়ো হয়ে যান স্থানীয়েরাও। আসে রেল রক্ষী বাহিনী। তারাই শিশুটিকে উদ্ধার করে অফিসে নিয়ে যায়। নতুন জামা কিনে এনে পরানো হয়। চিকিৎসককে দিয়ে দেখানোর পরে খাওয়ানো হয় দুধ। এর পরেই খবর যায় শিশু সুরক্ষা কমিটির কাছে। সেখান থেকে প্রতিনিধিরা এসে শিশুটিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যান।
কে বা কারা শিশুটিকে ফেলে গিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, ওই জায়গাটি নির্জন। রাতের দিকেই কেউ পুঁটলি করে নিয়ে এসে বাচ্চাটিকে ফেলে রেখে যায়।