জি ডি বিড়লা স্কুলের সামনে অভিভাবকদের বিক্ষোভ। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
অচলাবস্থা কাটল না জি ডি বিড়লায়। প্রথম থেকেই প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছিলেন তাঁরা। আর মঙ্গলবার স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ম্যারাথন বৈঠকের পর অভিভাবকরা ফের জানিয়েদিলেন কোনও ভাবেই পূর্বের অবস্থান থেকে পিছপা হবেন না তাঁরা। প্রিন্সিপালকে অবিলম্বে অপসারণ ও গ্রেফতার করতে হবে। পাশাপাশি, তাঁরা যে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ভাবে এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, তাও আর এক বার স্পষ্ট করে দিয়েছেন অভিভাবকরা।
জি ডি বিড়লা স্কুলে শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসার পর থেকে ক্ষোভে ফুটছেন অভিভাবকরা। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের পাশাপাশি স্কুলের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধেও গ্রেফতারির দাবিতে বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে। অভিভাবকদের চাপে মঙ্গলবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিভাবক ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন পুলিশ আধিকারিক, শিক্ষা দফতরের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরাও।
এ দিন প্রায় ঘণ্টা চারেকের বৈঠকে হয়। তার পর সাংবাদিক সম্মেলনে অভিভাবক ফোরামের তরফে জানানো হয়, আগামী কাল, বুধবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সময় নিয়েছে জি ডি বিড়লা কর্তৃপক্ষ। ওই সময়ের মধ্যেই স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে। পাশাপাশি, অভিভাবকরা জানিয়েছেন প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথের গ্রেফতারির দাবিতে স্কুলের বাইরে বিক্ষোভ চলবে। প্রতিদিন বিকেল চারটে থেকে শুরু হবে এই অবস্থান-বিক্ষোভ।
আরও পড়ুন: ফেটে পড়ছে বহু বছরের জমা ক্ষোভ
• জি ডি বিড়লা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভিভাবকদের বৈঠক শুরু।
• প্রিন্সিপালকে গ্রেফতারের দাবি অভিভাবকদের একাংশের।
• হাজিরা খাতা নিয়ে লালবাজারে স্কুলের প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথ।
• নতুন করে বিক্ষোভ জি ডি বিড়লায়।
• বৈঠক চলার সময়ই স্কুলের বাইরে শুরু হয় বিক্ষোভ।
শর্মিলা নাথ।
একই সঙ্গে, এ দিনের বৈঠকে অবিলম্বে স্কুল খোলার দাবিও করা হয়েছে অভিভাবদের তরফে। তাদের দাবি, চাপের ফলেই স্কুল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছেন বৈঠকে বসতে। সবে মাত্র প্রথম ধাপ পেরোলাম। আরও অনেক পথ বাকি।
আরও পড়ুন: স্কুল অচল নিয়ে তরজা অভিভাবকদের
গত পাঁচ দিনের মতো এ দিন সকাল থেকেই জি ডি বিড়লা স্কুল চত্বরে ছিল উত্তেজনা। পরিস্থিতি সকালেই তপ্ত হয়ে ওঠে বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের উপস্থিতি ঘিরে। সোমবারই অভিভাবকেরা জানিয়েছিলেন ঘোলা জলে রাজনীতিকেরা মাছ ধরবেন, এটা তাঁরা চান না। তার পরও এ দিন ফের স্কুলে সামনে হাজির হন এই বিজেপি সাংসদ। তখনই তাঁকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন নির্যাতিতা শিশু ছাত্রীটির বাবা। শিশুর বাবা হাত জোড় করে বিজেপি সাংসদকে বলেন, ‘‘দয়া করে স্কুল চত্বর ছেড়ে চলে যান। যে অভিভাবকরা বিপদে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁদের সঙ্গে নিয়েই আগামী লড়াই লড়তে চাই। আপনি প্রয়োজনে আমার বাড়িতে আসতে পারেন।’’
অন্য দিকে, এ দিনই লালবাজার থেকে ডেকে পাঠানো হয় জি ডি বিড়লা স্কুলের প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথকে। জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তদন্তকারী অফিসাররা। বেলা ১২টা নাগাদ তিনি লালবাজারে পৌঁছন। প্রায় ঘণ্টা পাঁচেক তাঁকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। স্কুলের শৌচাগারের সামনে আয়া থাকার কথা। ঘটনার দিন তাঁরা ছিলেন কি? অভিযুক্ত দুই শিক্ষক অভিষেক-মফিজুদ্দিন কখন স্কুলে ঢোকেন? তাঁরা কখন স্কুল থেকে বেরিয়ে ছিলেন? — শর্মিলা নাথের কাছ থেকে এ সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করেন তদন্তকারীরা।