হকার-তালিকা দেখে দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ

শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের জেরে যে সব হকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেবে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু কাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে হকার-তালিকা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:২৭
Share:

গড়িয়াহাটে নিজের পুড়ে যাওয়া স্টলের সামনে এক বৃদ্ধা। সোমবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

ট্রেড লাইসেন্সের খোঁজ শুরু হয়েছিল আগেই। এ বার খোঁজ পড়ল হকার-তালিকার। শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের জেরে যে সব হকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেবে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু কাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে হকার-তালিকা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

Advertisement

এ দিন ফিরহাদ বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত হকারদের ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে পুরসভা। সেই সঙ্গে তাঁদের চাকা লাগানো স্টল দেওয়া হবে। গড়িয়াহাট থানার কাছে হকার-তালিকা রয়েছে। সেই তালিকা দেখে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’ প্রসঙ্গত, শোভন চট্টোপাধ্যায় মেয়র থাকাকালীনই এলাকাভিত্তিক পুরনো হকারদের সংখ্যা নিরূপণ করতে তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছিল পুরসভা। পুলিশের সহায়তাও নেওয়া হয়েছিল সে সময়ে। হকারদের আবেদনের ভিত্তিতে সেই তালিকা তৈরির জন্য পুর কর্তৃপক্ষ বিশেষ দলও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু ঘটনাচক্রে সেই তালিকা তৈরির কাজ অসম্পূর্ণই থাকে। পুর আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, পুর তালিকার খোঁজ নেই বলেই এখন প্রয়োজনের সময়ে পুলিশের উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে পুরসভাকে। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘হকারদের আবেদন বস্তা ভর্তি করে জমা পড়েছিল পুরসভায়। হকারদের ফর্ম বিলি করা হয়েছিল। কিন্তু সে কাজ আর সম্পূর্ণ হয়নি। তাই এখন পুলিশের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।’’

প্রসঙ্গত, গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাগড়ি মার্কেটে আগুন লাগার পরে হকারদের যত্রতত্র বসা নিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করার কথা হয়েছিল। মার্কেটের গায়ে যে রকম বিপজ্জনক ভাবে প্লাস্টিক টাঙিয়ে বেচাকেনা চলে, তা-ও নিয়ন্ত্রণ করার কথা হয়েছিল। কিন্তু বাগড়ি-অগ্নিকাণ্ডের চার মাস পরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। শনিবারের রাতে ফের একটা অগ্নিকাণ্ডের পরে টনক নড়েছে পুরসভার!

Advertisement

এ দিন মেয়র জানিয়েছেন, গড়িয়াহাট, শ্যামবাজার, হাতিবাগান-সহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলিতে প্লাস্টিক টাঙিয়ে রীতিমতো জতুগৃহ তৈরি হয়েছে। কিন্তু ভরা বাজারে এমন ভাবে আর প্লাস্টিক লাগানো যাবে না। গড়িয়াহাট বাজারে আগুন নেভানোর কাজ করতে গিয়ে বড় বড় হোর্ডিংয়ের কারণেও সমস্যায় পড়তে হয়েছিল দমকলকর্মীদের। বহুতল ঢেকে হোর্ডিং লাগানোর ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট নিয়ম করা হবে। দমকলের সঙ্গে পুরো বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হবে বলে মেয়র জানিয়েছেন। সুশৃঙ্খল ভাবে হকারদের বসা ও ব্যবসা করার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম করতে আজ, মঙ্গলবার সমস্ত হকার ইউনিয়নের সঙ্গে মেয়রের বৈঠকে বসার কথা।

পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গড়িয়াহাট পুর বাজারের বিপরীতের বহুতলে আগুন লাগার পরে ওই এলাকায় বৈধ ট্রেড লাইসেন্স কাদের রয়েছে, সে ব্যাপারে খোঁজ শুরু হয়েছিল। এ দিন খানাতল্লাশি করে জানা যায়, আগুন লাগার সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় প্রত্যেক ব্যবসায়ীরই ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। দু’তিনটি দোকান এখনও ট্রেড লাইসেন্সের নবীকরণ করেনি। তবে মার্চ পর্যন্ত যে হেতু সময় রয়েছে, তার মধ্যেই নবীকরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে বলে আশা পুর কর্তৃপক্ষের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement