ফের বহুতলে আগুন, আবার খোঁজ পড়ল ট্রেড লাইসেন্সের

বাগড়ি মার্কেট অগ্নিকাণ্ডের সবে চার মাস হয়েছে। তার মধ্যেই ফের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে কলকাতা পুরসভায়।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৫৫
Share:

যুদ্ধ: গড়িয়াহাট উড়ালপুলের উপর থেকে চলছে আগুন নেভানোর লড়াই। শনিবার রাতে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

আবার ট্রেড লাইসেন্সের খোঁজ। ফের সমীক্ষা রিপোর্টে সংশ্লিষ্ট ঠিকানার উল্লেখ রয়েছে কি না, তার খানা-তল্লাশি!

Advertisement

বাগড়ি মার্কেট অগ্নিকাণ্ডের সবে চার মাস হয়েছে। তার মধ্যেই ফের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে কলকাতা পুরসভায়। কারণ, এ বার আগুন লাগার ঘটনাস্থল গড়িয়াহাটে পুরবাজারের বিপরীতে একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বহুতল। যেখানে শনিবার রাতের আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে একাধিক দোকান। এর পরেই ওই ঠিকানায় কোন কোন ব্যবসায়ীর বৈধ ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে, কোন দোকানের কী অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে পুরকর্তাদের একাংশ রবিবার সারাদিন ধরে খোঁজখবর করেছেন। প্রসঙ্গত, শিয়ালদহ সূর্য সেন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পরে শহরের পুর বাজার ও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাজার ঘুরে একটি সমীক্ষা রিপোর্ট তৈরি করেছিল পুরসভা। সেই রিপোর্টে গড়িয়াহাটের এই বহুতলটির উল্লেখ ছিল কি না, সেটাও দেখা হবে বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তারা। পুরসভার কমিশনার খলিল আহমেদ বলেন, ‘‘ট্রেড লাইসেন্সের সমস্ত বিষয়ই খতিয়ে দেখব আমরা।’’ যদিও এক পদস্থ পুর আধিকারিক বলছেন, ‘‘যে বহুতলে আগুন লেগেছে, সেটির সমীক্ষা এখনও করা হয়ে ওঠেনি।’’

গত ১৬ সেপ্টেম্বর যে দিন বাগড়ি মার্কেটে যে আগুন লেগেছিল, তা আরও বেশি বিধ্বংসী ছিল। শনিবার রাতের সেই আগুন নেভাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল দমকলকর্মীদের। ওই অগ্নিকাণ্ডের পরেই পুরসভার তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, শহরের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি বাজার ঘুরে ফায়ার অডিট করা হবে। কিন্তু সে কাজের গতি নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাগড়ি মার্কেট পুড়ে যাওয়ার পরে ফায়ার অডিট, অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য তোড়জোড় পড়ে গিয়েছিল। পুরসভার সমস্ত দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছিল। স্থির হয়েছিল, তাঁরাই দমকলের সঙ্গে যৌথ ভাবে মার্কেট ঘুরে ঘুরে রিপোর্ট তৈরি করবেন। সেই অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক বহুতল বা বাজারগুলিতে প্রয়োজনীয় অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। তবে বাগড়ি মার্কেট অগ্নিকাণ্ডই প্রথম নয়। ২০০৮ সালে নন্দরাম মার্কেট, ২০১২ সালে হাতিবাগান মার্কেট, ২০১৩-এ শিয়ালদহ সূর্য সেন মার্কেট-সহ শহরের একাধিক বাজারে আগুন লাগার পরে এরকম তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু কিছুদিন পরে আবার যে-কে সেই অবস্থা!

Advertisement

ট্রেডার্স অ্যাসেম্বলিতে ঢোকার পথে তারের জাল।—নিজস্ব চিত্র।

তবে গড়িয়াহাটের যে বহুতলটিতে আগন লেগেছে, তার অবস্থা নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় বিজেপির কাউন্সিলর তিস্তা বিশ্বাস (দাস)। তিনি জানান, সপ্তাহখানেক আগেই ওই বহুতলের একটি চাঙড় খসে পড়েছিল। পুরসভার বিল্ডিং দফতরে সে সময়ে খবর দেওয়া হলেও তার পরে পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। উল্টে বহুতলের চারপাশে প্লাস্টিক রয়েছে। রয়েছেন হকারেরা। তিস্তার কথায়, ‘‘যেমন বিপজ্জনক ভাবে দোকান চালানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, সেখানে পুরসভাকে আরও সতর্ক থাকা দরকার। তাতে এরকম ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচা যাবে।’’

যদিও মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানাচ্ছেন, হকারদের পসরা সাজানোর জন্য চাকা লাগানো ট্রলির ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা ভাবা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত বহুতল পরিষ্কারের পাশাপাশি, পুরো বিষয়টি নিয়েই দমকল দফতরের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ওই বহুতল সংলগ্ন এলাকায় ফুটপাতে হকার বসা নিয়ে আলাদা নীতি তৈরি হতে পারে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement