ফাইল চিত্র
প্রথমেই ‘সুখবৃষ্টি’ আবাসনে ওঠেনি তারা। নিউ টাউনে পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত দুই পঞ্জাবি গ্যাংস্টার কলকাতায় পৌঁছে সল্টলেকের একটি গেস্ট হাউসে ছিল। পঞ্জাবে গিয়ে সেখানে ধৃত ভরত কুমার ও সুমিত কুমারকে জেরা করে এই তথ্য পেয়েছেন বিধাননগর পুলিশের অফিসারেরা। প্রয়োজনে ভরতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হতে পারে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশি সূত্রের খবর, সল্টলেকের সিএল ব্লকের ওই গেস্ট হাউসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও নথি সংগ্রহ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কয়েক জনকে। ওই ব্লকের বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, রাজ্যে বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। পুলিশ নিয়মিত নাকা-তল্লাশি করছে। তার মধ্যেই ভিন্ রাজ্য থেকে দু’জন এসে সল্টলেকে আশ্রয় নিল কী ভাবে? পুলিশের বক্তব্য, সল্টলেকের বিভিন্ন গেস্ট হাউসে অতিথিদের সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া হয়, তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, পঞ্জাব-ত্রাস দুই দুষ্কৃতী অন্য কোনও পরিচয়ে ওই গেস্ট হাউসে আশ্রয় নিয়েছিল।
ভরতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কলকাতার সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র নিয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য মিলেছে বলে পুলিশি সূত্রের খবর। পঞ্জাব পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, ভরত গ্যাংস্টারদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে গোটা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ভরতই গ্যাংস্টারদের নিউ টাউনের আবাসনে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তিনি নিজে একটি হোটেলে ছিলেন। সেখানে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী-ও।
গ্যাংস্টারেরা কোথায় ছিল, এই প্রশ্নের উত্তরে নির্দিষ্ট জায়গার কথা বলতে না-পারলেও এলাকার পরিচিতি দিতে গিয়ে একটি মেট্রো স্টেশনের কথা জানিয়েছিলেন ভরত। পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সহায়তায় সম্ভাব্য আশ্রয়স্থল হিসেবে সিএল ব্লকের ওই গেস্ট হাউসের নাম উঠে আসে। দুই গ্যাংস্টার, জয়পাল ভুল্লার ও যশপ্রীত খারার তিন দিন ধরে সেখানেই ছিল বলে তদন্তকারীদের অনুমান। পরে তারা নিউ টাউনের ‘সুখবৃষ্টি’ আবাসনে চলে যায়। এর মধ্যে গ্যাংস্টারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে কেউ ওই গেস্ট হাউসে গিয়েছিল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ভরতের শ্বশুরবাড়ি কলকাতায়। নিউ টাউন ও সল্টলেকে গ্যাংস্টারদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে ভরত স্থানীয় ভাবে কাদের সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছিলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে।