জোকা মেট্রো

জমি-জটে এ বার মোমিনপুর স্টেশন

মোমিনপুর স্টেশনের জন্য জমি না মেলায় ফের অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর ভবিষ্যৎ। প্রকল্পের প্রস্তাবিত নকশায় মোমিনপুর স্টেশনের প্রস্থ ধরা হয়েছে ১২ মিটার। কিন্তু সেই মতো জমি মিলছে না। এই অবস্থায় স্টেশনের প্রস্থ কমিয়ে ৫ মিটার করা যেতে পারে বলে পরিবর্তিত নকশা পেশ করে জানাল মেট্রো।

Advertisement

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৬ ০২:৫৭
Share:

মোমিনপুর স্টেশনের জন্য জমি না মেলায় ফের অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর ভবিষ্যৎ।

Advertisement

প্রকল্পের প্রস্তাবিত নকশায় মোমিনপুর স্টেশনের প্রস্থ ধরা হয়েছে ১২ মিটার। কিন্তু সেই মতো জমি মিলছে না। এই অবস্থায় স্টেশনের প্রস্থ কমিয়ে ৫ মিটার করা যেতে পারে বলে পরিবর্তিত নকশা পেশ করে জানাল মেট্রো। সেই সঙ্গেই
তারা জানিয়ে দিয়েছে, মোমিনপুর স্টেশনের জন্য জমি না পেলে জোকা-বিবাদী বাগ প্রকল্পের চূড়ান্ত রূপ দেওয়া কার্যত অসম্ভব।

স্টেশনের জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষ যে জমিটি চাইছেন, তার মালিক সেনাবাহিনী। তাই মোমিনপুর স্টেশনের জন্য সেনার কাছে জমি চাইতে রেল মন্ত্রককে আর্জি জানিয়েছেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। ঠিক হয়েছে, রেল মন্ত্রক মেট্রো কর্তৃপক্ষের ওই আর্জি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে দরবার করবে। মেট্রো রেলের এক কর্তার কথায়, ‘‘মোমিনপুর স্টেশনের আগেই জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর লাইন মাটির তলায় ঢুকে যাওয়ার কথা। ওই স্টেশনের অনুমতি না মিললে ভূগর্ভস্থ লাইন পাতার কাজই শুরু করা যাবে না।’’ মেট্রো সূত্রের খবর, প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট অনুযায়ী, মোমিনপুর স্টেশনের আগে ছিল মাঝেরহাট স্টেশন, পরে ভিক্টোরিয়া। প্রথমে মেট্রো মোমিনপুর স্টেশন বাদ দিয়েই প্রকল্পের নকশা তৈরি করার কথা ভেবেছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রে সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে অনেকটা পথ পেরোতে হবে, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলেই দাবি মেট্রোকর্তাদের। এই অবস্থায় কী ভাবে ওই অংশের কাজ সম্পূর্ণ করা যায়, তা নিয়ে চিন্তায় মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

জোকা-বিবাদী বাগ প্রকল্পের জন্য এর আগে রেসকোর্স, ভিক্টোরিয়া এবং ময়দানের নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি ঘিরে জটিলতা হয়। ফোর্ট উইলিয়াম সংলগ্ন ওই এলাকাগুলিতে মাটির নীচে মেট্রোর লাইন পাতার বিষয়ে আপত্তি জানায় সেনা। তবে রেল মন্ত্রকের হস্তক্ষেপে গত জানুয়ারি মাসে সুড়ঙ্গ তৈরির অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু তার পরেই সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়, ওই প্রকল্পের জন্য কম্যান্ড হাসপাতালের সামনে মোমিনপুর স্টেশনের জন্য প্রস্তাবিত জমিটি ছাড়া যাবে না।

সে কথা জানার পরে রাজ্য সরকারের তরফে মোমিনপুর স্টেশন তৈরির জন্য আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে কিছুটা জমি ছেড়ে দেওয়ার কথা জানানো হয় মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘কম্যান্ড হাসপাতালের জমি পাওয়া না গেলে, তা নিয়ে গোঁ ধরে থাকার বদলে অন্য উপায় বার করারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তাঁরা এখনও হাসপাতালের জমিতেই স্টেশন চান।’’ কলকাতা মেট্রোর এক কর্তার অবশ্য বক্তব্য, ‘‘আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে মোমিনপুর স্টেশন করাই যায়। কিন্তু সেটা কার্যত শেষ সম্ভাবনা। কারণ এতে খরচ বাড়বে, মেট্রো রুটেরও পরিবর্তন করতে হবে। সবচেয়ে সুবিধা কম্যান্ড হাসপাতাল সংলগ্ন জমিটি পাওয়া গেলে। সে কারণেই আমরা শেষ পর্যন্ত ওই জমিটি পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’

মেট্রো রেল সূত্রের খবর, কম্যান্ড হাসপাতাল ছাড়াও তারাতলায় টাঁকশালের একটু জমি পাওয়া এখনও বাকি। তবে ওই মেট্রোকর্তার কথায়, ‘‘ভোটের জন্য ওই কাজটি আটকে ছিল। আশা করি, এ বার মাসখানেকের মধ্যে আমরা ওই জমিটি টাঁকশালের কাছ থেকে পেয়ে যাব। বাকি থাকবে শুধু মোমিনপুর স্টেশনের জন্য জমি চূড়ান্ত করার বিষয়টি।’’

জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্প যে বিবাদীবাগের বদলে এসপ্ল্যানেডে শেষ হবে, তা ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। এসপ্ল্যানেডেই জোকা মেট্রো ছাড়াও একসঙ্গে মিশছে বর্তমান মেট্রো রুট এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। তিনটি মেট্রো রুটের কেন্দ্রস্থল হিসেবে তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে এসপ্ল্যানেডকে। তা নিয়ে নকশা তৈরির কাজও শুরু করে দিয়েছে রাজ্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement