ছবি সংগৃহীত।
ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি এখন আর নতুন কিছু নয়। এ বার তাই ‘কেওয়াইসি’-র অভাবে অনলাইন ওয়ালেটের ‘মেয়াদ ফুরোনোর’ ভয় দেখিয়ে জালিয়াতির পথ নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। সম্প্রতি এই কায়দায় শহরের দু’জনের থেকে ৫০ হাজার টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে তারা।
এক সময়ে কার্ড জালিয়াতির সূত্র ধরে পুলিশের কাছে আতঙ্ক হয়ে উঠেছিল জামতাড়া গ্যাং। মূলত ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া জেলার কর্মটাঁড়ে ঘাঁটি ওই দুষ্কৃতীদের। যে ভাবে অনলাইন ওয়ালেট জালিয়াতি করা হচ্ছে, তাতেও ওই গ্যাংয়ের চাঁইরা জড়িত থাকতে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
কাশীপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার আধিকারিক অমিত চট্টোপাধ্যায় জানান, তিনি ২৯ ডিসেম্বর মোবাইলে একটি মেসেজ পান। তাতে লেখা ছিল, তাঁর একটি অনলাইন ওয়ালেটের ‘কেওয়াইসি’ আপডেট না-করলে সেটির মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে। মেসেজে একটি নম্বরও দেওয়া ছিল। সন্ধ্যায় অমিতবাবু সেই নম্বরে ফোন করলে ও-পারে থাকা ব্যক্তি অনলাইন ওয়ালেট সংস্থার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে তাঁকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলে। তার পরেই ওই অ্যাকাউন্টে ডেবিট কার্ড মারফত এক টাকা পাঠাতে বলে সে। অমিতবাবু তা না-করা সত্ত্বেও টের পান, দু’দফায় প্রায় আট হাজার ছ’শো টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে চলে গিয়েছে। এর পরে আর এক দফায় সাড়ে ১০ হাজার টাকা ডেবিট কার্ড থেকে যায়। এ ভাবেই দফায় দফায় যায় আরও ১৩ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কারখানায় ট্রাক, আহত পাঁচ
দুষ্কৃতীর চক্করে পড়েছেন বুঝতে পেরে অমিতবাবু ফোন কেটে দেন এবং পুলিশে যোগাযোগ করেন। ওই ওয়ালেট সংস্থার সেক্টর ফাইভের অফিসেও অভিযোগ জানান। অমিতবাবু জানান, পুলিশের তৎপরতায় তিনি আপাতত ১৩ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছেন।
এ ভাবেই জালিয়াতির খপ্পরে পড়েছেন সত্তরোর্ধ্ব অমলকুমার সেন। তিনি জানিয়েছেন, গত শুক্রবার তিনি একটি মেসেজ পান এবং সেখানে দেওয়া নম্বরে ফোন করলে কেউ ধরেননি। পরে তাঁকে ফোন করে ওয়ালেট চালু করার কথা বলে প্রায় ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। অমলবাবু পরে জানতে পারেন, তাঁর অন্য দু’টি ব্যাঙ্কের কার্ড থেকেও টাকা সরানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সন্দেহ হওয়ায় সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
আরও পড়ুন: সল্টলেকে রাস্তা বেহাল, নজর নেই পুরসভার
সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, অনেক সময়ে একটি লিঙ্ক পাঠিয়ে মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়। সেগুলিকে বলা হয় শেয়ারিং অ্যাপ। তা দিয়ে গ্রাহকের মোবাইলের সব তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়। কখনও মোবাইলের তথ্যের প্রতিলিপি (ক্লোন) তৈরি করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে অনলাইন ওয়ালেট ব্যবহারকারীদের তথ্য কী ভাবে পাচার হচ্ছে, তা সংশ্লিষ্ট সংস্থার দেখা উচিত। এই দায় তারা এড়াতে পারে না। অমিতবাবুর বক্তব্য, ওই ওয়ালেট সংস্থার অফিস খুঁজে বার করতে হিমশিম খেয়েছেন তিনি। প্রথমে অভিযোগ নিতেও অস্বীকার করছিল তারা। কিন্তু তিনি জোর করায় শেষমেশ অভিযোগ নেয়।