সাড়ে চার বছর আগে ভুয়ো কার্ডে সোনার গয়না কেনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক। সেই ঘটনায় বুধবার নাইজেরিয়ার তিন নাগরিককে কারাদণ্ড দিল কলকাতা নগর দায়রা আদালত। ওই মামলাতেই অভিযুক্ত চার ভারতীয় নাগরিক অবশ্য বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
২০১০-এর ওই ঘটনার তদন্তে নেমে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির হদিস পেয়েছিল লালবাজার। তিন নাইজেরীয়-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে চক্রের মূল পাণ্ডা পিটার ওরেনুবিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারক। অ্যাডাম বেনসন এবং জেমস তায়ো-র যথাক্রমে সাত এবং তিন বছরের জেল হয়েছে। তিন জনেই এত দিন জেল-হাজতে ছিল।
লালবাজার সূত্রের খবর, বিদেশের বিভিন্ন দোকান ও শপিং মলের ক্রেডিট কার্ড সোয়াইপ মেশিনে বিশেষ যন্ত্র লাগিয়ে লোকজনের কার্ডের তথ্য চুরি করে নিত জালিয়াতেরা। বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফাঁকা কার্ডে পুরে দেওয়া হত সেই তথ্য। সেই কার্ড দিয়ে বিভিন্ন এজেন্ট মারফত দামি গয়না ও জিনিসপত্র কেনা হত। গোয়েন্দারা জানান, এই মামলায় জেমসের সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আগে একটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় বিদেশি সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী সে জেল বা সরকারি হোমের বাইরে বেরোতে পারবে না।
সরকার পক্ষের আইনজীবী তরুণ চট্টোপাধ্যায় ও অশোক ঘোষ জানান, মামলার তদন্তকারী অফিসার সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গোয়েন্দারা প্রচুর তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করেন। তার ভিত্তিতেই ওই তিন জনের সাজা হয়। তবে বাকিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হল না কেন, সদুত্তর মেলেনি। আইনজীবীদের একাংশের ব্যাখ্যা, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তড়িঘড়ি বিচার শেষ করতেই হয়তো সরকারি কৌঁসুলিরা মূল চক্রীদের বিরুদ্ধেই বেশি তথ্যপ্রমাণ পেশ করেছেন। পিটারের আইনজীবী জাকির হুসেন বলেন, ‘‘ভুয়ো কার্ড তৈরির জন্য তিন নাইজেরীয়র সাজা হল। অথচ যারা তা দিয়ে মালপত্র কিনল, তাদের সাজা হল না। এটা বিস্ময়কর।’’ এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানান তিনি।