এটিএম কার্ড হাতিয়ে জালিয়াতি

এ যেন ভোজবাজির খেলা! হাতে ধরা ‘টেক্কা’র তাস। জাদুকর গিলিগিলি ফু বলতেই তা বদলে হয়ে যাচ্ছে ‘গোলাম’-তাস। এ ম্যাজিক সবাই চেনেন। কিন্তু এমন ভাবে যদি এটিএম কার্ড বদলে যায়, তা হলে তা অবশ্যই ম্যাজিক নয়, জালিয়াতি।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ০২:০৫
Share:

এ যেন ভোজবাজির খেলা!

Advertisement

হাতে ধরা ‘টেক্কা’র তাস। জাদুকর গিলিগিলি ফু বলতেই তা বদলে হয়ে যাচ্ছে ‘গোলাম’-তাস। এ ম্যাজিক সবাই চেনেন। কিন্তু এমন ভাবে যদি এটিএম কার্ড বদলে যায়, তা হলে তা অবশ্যই ম্যাজিক নয়, জালিয়াতি। আর এই কার্ড বদলের জেরেই পঞ্চাশ হাজার টাকা খোয়ালেন প্রাক্তন এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজার।

শুক্রবার এমনই জালিয়াতির শিকার হয়েছেন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা সাধন দত্ত। তিনি টেবিল টেনিসের জাতীয় দলের প্রাক্তন খেলোয়ারও। এ দিন দুপুরে বাদামতলায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে টাকা তুলতে যান তিনি। বাইরে থেকে দেখেন একটি মেশিনে আউট অব অর্ডার লেখা এবং অন্য মেশিনের সামনে দাঁড়িয়ে কালো বারমুডা ও গেঞ্জি পরা এক যুবক। কিছুক্ষণ পরে ওই যুবক আউট অব অর্ডার মেশিনের দিকে সরে যেতে তিনি টাকা তুলতে ঢোকেন।

Advertisement

পুলিশকে সাধনবাবু জানান, কার্ড সোয়াইপ করে বোতাম টিপলেও তা কাজ করছিল না। বোতামগুলি অত্যন্ত শক্ত হয়ে গিয়েছিল। কয়েক মিনিট চেষ্টা করেও কিছু না হওয়ায় সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন হিন্দিভাষী ওই যুবক। ফের বোতাম টিপে টাকা বার করার চেষ্টা করেন সাধনবাবু। সাধনবাবুর হয়ে ওই যুবকও কয়েক বার দেখার চেষ্টা করেন বোতাম কেন কাজ করছে না। আসলে ‘ভোজবাজি’ ছিল সেখানেই। তখনই সাধনবাবুর চোখে ধুলো দিয়ে বদলে গিয়েছিল তাঁর এটিএম কার্ড। আর ওই যুবক কাউন্টার থেকে বেরিয়ে যেতেই সাধনবাবু দেখেন তাঁর হাতে দিলীপকুমার ঘোষ নামে অন্য এক ব্যক্তির কার্ড!

ব্যাঙ্কে ফোন করে সাধনবাবু জানেন, অদূরেই অন্য একটি এটিএম থেকে দশ মিনিটের মধ্যে তাঁর কার্ড ব্যবহার করে দু’বারে ২০ হাজার এবং এক বারে ১০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। এর পরে থানায় অভিযোগ করেন তিনি।

পুলিশ জানায়, এটিএমের আউট অব অর্ডার লেখা মেশিনে কেউ আলকাতরা লেপে রেখেছিল। যাতে দেখে মনে হয় তা খারাপ। অন্য মেশিনের বোতামে আঠা ফেলে রাখায় সেগুলি শক্ত হয়ে কাজ করছিল না। তদন্তকারীদের ধারণা, সাহায্য করতে এগিয়ে এসে প্রথমে পিন নম্বর দেখে নিয়ে পরে কায়দা করে সাধনবাবুর কার্ডটিও বদলে ফেলেছিল ওই যুবকই। তার পরে তিন বারে টাকা তুলে নেয় সে।

সাধনবাবু বলেন, ‘‘ছেলেটির কথায় কেমন যেন সম্মোহিত হয়ে গিয়েছিলাম। তখনই হয়তো কার্ডটা নিয়ে নেয়।’’ স্থানীয়েরা পুলিশকে জানিয়েছেন, নিরাপত্তারক্ষীহীন ওই এটিএমের মেশিনে মাঝে মধ্যেই বোতামে এমন সমস্যা হয়। তদন্তকারীদের ধারণা, শিকার ধরতেই এই কাজ করে রাখে কেপমারেরা। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। দু’টি এটিএমের সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement