New Town

নিউ টাউন-কাণ্ডে আটক ৪, পঞ্জাবে যাচ্ছে পুলিশ

পুলিশ জানিয়েছে, নিউ টাউনের ওই আবাসনের নিরাপত্তা নিয়ে সেখানকার দেখভালকারী সংস্থার সঙ্গে শীঘ্রই বৈঠক করতে চলেছে তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২১ ০৬:১৪
Share:

ফাইল চিত্র

নিউ টাউনের আবাসনে গুলি-কাণ্ডে আরও চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে চামকউর সিংহ নামে এক জনকে সোমবার সকালে বসিরহাটের এক যৌনপল্লি থেকে আটক করা হয়। বাকি তিন জনকে ভাঙড়ের কাশীপুর থানা এলাকার চিনাপুকুরে, চামকউরের বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, পরে ভাঙড় থানায় চামকউর সিংহ, আমনদীপ সিংহ, রেশমজিৎ সিংহ এবং জ্যাক সিংহ শর্মাকে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং বারুইপুর পুলিশের অতিরিক্ত সুপার জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

Advertisement

গত বুধবার নিউ টাউনের ‘সুখবৃষ্টি’ আবাসনে এসটিএফের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জয়পাল সিংহ ভুল্লার এবং যশপ্রীত খারার নামে পঞ্জাবের দুই দাগি ফেরার দুষ্কৃতী নিহত হয়। সেই সূত্রেই এই চার জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, এ রাজ্যে ভাল রকম ‘নেটওয়ার্ক’ না-থাকলে ওই দুই দুষ্কৃতী পঞ্জাব থেকে এসে এখানে আশ্রয় নিতে পারত না। ওই আবাসনে দুই দুষ্কৃতীকে আশ্রয় দেওয়ার সূত্রে ইতিমধ্যেই ভরত কুমার ও সুমিত কুমার নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পঞ্জাব পুলিশ। ভরতই জয়পাল ও তার সঙ্গীকে এ রাজ্যে নিয়ে এসেছিল এবং সুমিতের পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নিউ টাউনের আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল। ২৩ মে থেকে ওই ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করে জয়পাল ও যশপ্রীত। তার আগে নিউ টাউনেই দিন তিনেক একটি হোটেলে ছিল তারা।

এ রাজ্যে পঞ্জাবের দুষ্কৃতীদের যোগসূত্র বা ‘লিঙ্ক ম্যান’ কে, তা জানতে বিধাননগর পুলিশের দুই অফিসার পঞ্জাবে যাচ্ছেন। প্রয়োজনে ধৃত দু’জনকে পঞ্জাব থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এ রাজ্যে আনতে পারে পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ২২ মে নগদ টাকা অগ্রিম দিয়ে নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। ভরত নিজে থাকবে বলেই ফ্ল্যাটের মালিক ও দালালকে জানিয়েছিল। সেই কারণেই ভরত ও সুমিতকে নিজেদের হেফাজতে পেতে চাইছে বিধাননগর পুলিশ।

Advertisement

তবে চামকউরের কাছ থেকে ও গুরুত্বপূর্ণ কোনও তথ্য মিলেছে কি না, রাত পর্যন্ত তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে পঞ্জাবের ভাতিন্ডার বাসিন্দা চামকউর বছর দশেক আগে এ রাজ্যে আসে। ভাঙড়ের চিনাপুকুরে তাকে মূলত ‘দাউদ’ নামের এক পশু চিকিৎসক হিসেবেই চেনেন বাসিন্দারা। রাবিয়া বিবি নামে স্থানীয় এক মহিলাকে সে বিয়েও করে। চিনাপুকুরের দোতলা বাড়ির একাংশে বড় মাপের খাটালও রয়েছে তার। পঞ্জাবে চামকউরের প্রথম পক্ষের স্ত্রী রয়েছেন। প্রথম পক্ষের সন্তান জ্যাক চিনাপুকুরেই থাকে। দিন দশেক আগে আমনদীপ এবং রেশমজিৎ চিনাপুকুরে এসেছে। তবে এ দিন রাবিয়া নিজেই স্বীকার করেছেন, তার স্বামীর গতিবিধি বেশ সন্দেহজনক।

এর মধ্যেই এ রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে ছেলেকে খুনের অভিযোগ করেছে নিহত জয়পাল সিংহ ভুল্লারের পরিবার। পঞ্জাবে জয়পালের বাবা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দ্বিতীয় বার ময়না-তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত ছেলের দেহের সৎকার করবেন না তিনি। তাঁর অভিযোগ, দ্রুত শেষকৃত্য সেরে ফেলতে পুলিশ চাপ দিচ্ছে। তাঁর ছেলেকে মেরে ফেলার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও তাঁর অভিযোগ। জয়পালের বাবা এক জন প্রাক্তন পুলিশকর্মী। তবে এসটিএফ সূত্রের দাবি, সে দিন প্রথমে জয়পাল ও যশপ্রীতই পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তাতে কার্তিকমোহন ঘোষ নামে এক অফিসার আহত হন। তার পরেই আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। ফরেন্সিক পরীক্ষায় জয়পাল ও যশপ্রীতের গুলি চালানোর প্রমাণ রয়েছে বলেও এসটিএফ সূত্রের দাবি।

অন্য দিকে, পুলিশ জানিয়েছে, নিউ টাউনের ওই আবাসনের নিরাপত্তা নিয়ে সেখানকার দেখভালকারী সংস্থার সঙ্গে শীঘ্রই বৈঠক করতে চলেছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement