সহমর্মী: আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রাক্তনীরা। শুক্রবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দফতরে। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা। প্রথম ধাপে আগামী পয়লা বৈশাখে তাঁরা পাঁচটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দেবেন। প্রাক্তনীদের পরিকল্পনা রয়েছে ৫০০টি বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার।
শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস প্রাক্তনীদের ওই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি জানান, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের চার প্রাক্তনী প্রথম এই বিষয়ে উদ্যোগী হন। এর পরে কাজএগিয়েছে। উপাচার্য বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সব রকম সাহায্য করা হবে।’’
যে চার প্রাক্তনী এই বিষয়ে প্রথম উদ্যোগী হয়েছিলেন তাঁরা হলেন, সূর্যদীপ্ত দত্ত, চিত্রলেখা দত্ত, অভীক মুখোপাধ্যায় এবং অরূপ চক্রবর্তী। ১৯৯১ সালের প্রাক্তনী তাঁরা। সূর্যদীপ্ত জানান, আমপানের পরে তাঁরা মনে করেছিলেন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে তাঁদের দাঁড়ানো প্রয়োজন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের ক্লাসের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই বিষয়ে কাজ শুরু করেন। এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ছাদ’।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ ব্লকের বালিয়াডাঙায় প্রথমে ১০টি বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম পাঁচটি পয়লা বৈশাখের দিন হস্তান্তর করা হবে। তাঁদের লক্ষ্য আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৫০০টি বাড়ি তৈরি করে দেওয়া। এ ছাড়া পরিকল্পনা রয়েছে পানীয় জল, শৌচালয় ও গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করে তাঁদের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করারও পরিকল্পনা রয়েছে। এই কাজে সাহায্যের জন্য এর পরে বিভিন্ন সংস্থার কাছে আবেদন জানাতে চান সূর্যদীপ্তবাবুরা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাইছি সংস্থাগুলি কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের কাজে সাহায্য করুক।’’
ইতিমধ্যেই বালিয়াডাঙায় পানীয় জলের জন্য গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। বাড়ি তৈরি শুরু হয়েছে। নির্মীয়মাণ বাড়িগুলির নকশা তৈরি করেছেন ২০১১ সালের কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রাক্তনী সিদ্ধার্থ সেনগুপ্ত। বাড়িগুলিতে একটি শোয়ার এবং একটি বসার ঘরের পাশাপাশি থাকবে শৌচাগার এবং রান্নাঘর।
যে পাঁচ জন প্রথম দফায় এই বাড়ি পাবেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাধন লেই। এ দিন সাধনবাবু জানান, তাঁরা সকলেই দিনমজুর। আমপানে মাথা গোঁজার ঠাঁই সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। তখন তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন সূর্যদীপ্তবাবুরা।