অভিযুক্ত: হাওড়া আদালতে গোবিন্দ হাজরা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
আর্থিক দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগ তো ছিলই। এ বার আগ্নেয়াস্ত্র রাখারও অভিযোগ উঠল হাওড়ার জগদীশপুরের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান গোবিন্দ হাজরার বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, বুধবার রাতে গোবিন্দের বাগানবাড়ি থেকে একটি আধুনিক সেভেন এমএম পিস্তল উদ্ধার হয়েছে। ওই নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি ওই আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করেছিলেন। শুক্রবার গোবিন্দকে হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
আর্থিক দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগে গত ২০ জুন বর্ধমানের কালনা থেকে গোবিন্দকে গ্রেফতার করে হাওড়া সিটি পুলিশ। এর পরেই ওই নেতার একের পর এক দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসে। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, জগদীশপুরের নতুন বিশ্বাসপাড়ায় তাঁর ‘রূপশ্রী উদ্যান’ নামে বাগানবাড়িতে অস্ত্র লুকনো আছে। এর পরেই বুধবার গভীর রাতে পুলিশ সেখানে হানা দেয়। প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে এমন আরও কিছু আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করে রাখার অভিযোগ পেয়ে জগদীশপুরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিও শুরু
করেছে পুলিশ।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে বেআইনি ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে গোবিন্দেরবিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। নির্বাচনের সময়ে ওই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে গোবিন্দ আর কী কী অপরাধ করেছিলেন, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। জগদীশপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য ইতিপূর্বেই গোবিন্দের বিরুদ্ধে ভয় দেখিয়ে মারধর করার অভিযোগ এনেছেন। এলাকায় বাড়ি বা দোকান করতে গেলে জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগও সামনে এসেছে। ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করা ওই নেতার গুন্ডাবাহিনীর লোকজনকেও খুঁজছে পুলিশ। এলাকার বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় ওই নেতার অত্যাচারের তথ্য জোগাড়ের জন্য অভিযোগ-বাক্স তৈরি করে লাগিয়েছেন। মামলার সরকারি আইনজীবীদের দাবি, অস্ত্র আইনে ওই নেতার অন্তত সাত বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হতে পারে।