মানস মুখোপাধ্যায়
বাড়ির দেওয়ালে পোস্টার সাঁটতে বারণ করেছিলেন। জবাবে হামলা হল পূর্ব বেলঘরিয়ার সিপিএম লোকাল কমিটির সম্পাদকের বাড়িতে। বেধড়ক মার খেলেন কামারহাটির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়, লোকাল কমিটির সম্পাদক এবং অন্য নেতারা। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আঙুল উঠেছে তৃণমূলের এক দল কর্মী-সমর্থকের দিকে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুরভোটের প্রচারকে ঘিরে সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কামারহাটি পুরসভার বেলঘরিয়া-নন্দননগরে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম জানায়, এর প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার বেলঘরিয়ায় বেসরকারি হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভে যোগ দেবেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা।
ঠিক কী ঘটেছিল?
সিপিএমের অভিযোগ, রাত ১০টা নাগাদ পূর্ব বেলঘরিয়া লোকাল কমিটির সম্পাদক নন্দলাল বসুর বাড়ির দেওয়ালে পোস্টার সাঁটছিলেন তৃণমূলের লোকজন। আপত্তি করেন নন্দবাবুর বৌদি। তাঁকে কটূক্তি করা হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করেন নন্দবাবুর বৃদ্ধা মা ও ভাই। তাঁদের মারধর করা হয়। প্রচার সেরে বাড়ি ফিরছিলেন নন্দবাবু। অভিযোগ, তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা তাঁর উপরেও চড়াও হন। মাটিতে ফেলে বেধড়ক পেটানো হয় ওই নেতাকে। ভাঙচুর শুরু হয় তাঁর বাড়িতে।
খবর পেয়ে চলে আসেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়, দেবজ্যোতি দাস, মলয় দাস-সহ সিপিএমের নেতা, ছাত্রনেতারা। তাঁদেরও মাটিতে ফেলে পেটানো হয় বলে অভিযোগ। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, পুলিশ এসেছিল। কিন্তু মারধর-ভাঙচুর হচ্ছে দেখেও তারা চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল।
গণ্ডগোল হচ্ছে শুনে নন্দননগরে আসেন কামারহাটির প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মানস মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ, নন্দবাবুর বাড়ি থেকে কিছু দূরে গাড়ি থেকে নামতেই হামলাকারীরা মানসবাবুর দিকে তেড়ে যায়। তাঁকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে চলতে থাকে মারধর। তাঁকে ঝিলে ফেলে দেওয়ারও চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের দল বেঁধে এগিয়ে আসতে দেখে চম্পট দেয় হামলাকারীরা।
মানসবাবু এবং অন্য দু’জনকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অভিযোগ, পরে নন্দবাবুকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স এলে হামলাকারীরা সেটিকে ঢুকতে বাধা দেয়। পরে নন্দবাবুকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূল অত্যাচার চালাল। অথচ পুলিশ দর্শক হয়ে রইল। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামছি।’’
সব অভিযোগ অস্বীকার করে উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘ওঁরা (সিপিএম) এক সময় যাদের হাতে অস্ত্র দিয়ে ভোট লুঠ করিয়েছিলেন, সেই ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনরাই আজ বিরোধী হয়ে ওদের পেটাচ্ছে। সবই সিপিএমের গোষ্ঠী-কোন্দলের ফল!’’