প্রতীকী ছবি।
শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় কত পরিযায়ী পাখি আসছে, তার গণনা হয়েছিল শীতের মুখে। কিন্তু শীত চলে যাওয়ার পরে পরিযায়ীরা সকলেই দেশে ফিরে গেল কি না, তার হিসেব আর রাখা গেল না লকডাউনের জেরে। কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পাশাপাশি রাজ্য বন দফতরও এ ব্যাপারে সমীক্ষা চালায়।
বন দফতরের উদ্যান বিভাগের মুখ্য বনপাল রাজু দাস বললেন, ‘‘লকডাউনের জেরে এপ্রিল মাসে শহরের বিভিন্ন পার্ক ও উদ্যানে পরিযায়ী পাখির গণনা বা তাদের গতিবিধির হিসেব রাখা সম্ভব হয়নি।” প্রায় সমস্ত পার্ক এবং উদ্যানই এখন বন্ধ। তা ছাড়া, এই ধরনের কর্মসূচিতে জমায়েত করতে দেওয়া সম্ভব নয়।
বন দফতর সূত্রের খবর, শীতের মুখে পরিযায়ীরা মূলত শীতপ্রধান দেশ থেকে এখানে আসে। আবার ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে এপ্রিলের মধ্যে ফিরে যেতে শুরু করে। কোন প্রজাতির পাখি কোন বছর কত সংখ্যায় আসছে, তার হিসেব রাখতেই প্রতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ একটি সমীক্ষা হয়। আর এক বার হয় এপ্রিল মাসে। বনাধিকারিকদের মতে, কোন পাখি এল বা এল না, তা জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পরিযায়ী পাখির আসা-যাওয়াটা পরিবেশগত ভারসাম্যের একটা সূচক বলে ধরা হয়।
দক্ষিণ কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর ছাড়াও গড়িয়ার চিন্তামণি কর উদ্যান, শিবপুরের বটানিক্যাল গার্ডেন ও সাঁতরাগাছির ঝিলে প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসে। পাখি-বিশারদ সুজন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত বছরের এপ্রিল মাসের হিসেব অনুযায়ী, রবীন্দ্র সরোবরে ১০৪ প্রজাতির পাখি দেখা গিয়েছিল। শ’খানেক প্রজাতির পাখি দেখা গিয়েছে চিন্তামণি কর উদ্যানে। বটানিক্যাল গার্ডেনেও দেখা গিয়েছিল প্রায় ৫৬ প্রজাতির পাখি।’’ সুজনবাবু জানান, রবীন্দ্র সরোবরেই বেশি পাখি দেখা গিয়েছে।
তিনি জানান, গত কয়েক বছরে রবীন্দ্র সরোবরে দেখা গিয়েছে ‘ইন্ডিয়ান পিটা’, ‘আইব্রাউড থ্রাশ’, ‘টিকেলস থ্রাশ’, ‘স্কেলি থ্রাশ’, ‘ইন্ডিয়ান ব্লু রবিন’, ‘এশিয়ান ব্রাউন ফ্লাইক্যাচার’, ‘ব্রাউন ব্রেস্টেড ফ্লাইক্যাচার’-সহ আরও অনেক পরিযায়ী পাখি। চিন্তামণি কর উদ্যান, বটানিক্যাল গার্ডেন ও সাঁতরাগাছিতেও মোটামুটি এই সব প্রজাতিরই পাখির দেখা মিলেছে।
রবীন্দ্র সরোবরে পাখি গণনা করে, এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে সুদীপ ঘোষ বললেন, ‘‘পরিযায়ী পাখিদের সব চেয়ে বেশি পছন্দের জায়গাগুলির অন্যতম রবীন্দ্র সরোবর। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পাখিগুলি সরোবর হয়েই ফেরে।’’