‘‘সবই তো রাজনৈতিক। তা বাদ দিয়ে তো জীবনই হয় না।’’ মাঝগঙ্গায় নৌকায় গ্রীষ্ম-বিকেলের হাওয়া খেতে খেতে বললেন অস্কার কাস্ত্রো। সঙ্গী নাতাশা, সিলভি, তালেফ ও ‘অ্যালেফ থিয়েটার কোম্পানি’র দশ জন।
‘ব্রাত্যজন’-এর চতুর্থ আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব উপলক্ষেই শহরে এসেছেন ওঁরা। ৫ জুন তাঁদের নাটক ‘দ্য মিস্ট’ অভিনীত হবে সেখানে। মঞ্চে সেখানে বাস্তব আর গল্পের মাঝখানের রেখাটা ঝাপসা হয়ে যাবে এক সময়ে। নাটকের মধ্যেই থাকবে আর একটা নাটক।
‘‘বাক্-স্বাধীনতার জন্য ধর্ম-নিরপেক্ষতা খুবই জরুরি। আবার গোঁড়া নাস্তিকতাও অনেক সময়ে বিপদ ডেকে আনে। সহনশীলতার মাত্রাটা খোঁজা দরকার’’, বলছিলেন সেই ১৯৭৬ সালে ফ্রান্সে নিশ্চিন্ত আশ্রয় খুঁজে পাওয়া অস্কার কাস্ত্রো। তার আগে লাতিন আমেরিকার চিলি-তে রাষ্ট্রশাসনের কোপে পড়েছিল তাঁর নাটক ‘‘অ্যান অ্যালিগরি অব দ্য মিলিটারি ক্যুপ’’। গ্রেফতার করে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অস্কার-সহ আরও কয়েক জনকে। সেখানেও প্রতি সপ্তাহে সহবন্দিদের নিয়ে নাটক করতেন তিনি। এখন অবশ্য সব ঠিকঠাক। বছরে এক বার চিলি-তে যান তিনি। আর বাসা বেঁধেছেন ফরাসি মফস্বল ইভরি স্যুর সেন-এ। তবে তাঁর নাটকে আজও তিনি বলেন লাতিন আমেরিকান ভাইদের কথা। তাঁর জীবনের কথা জানতেই লাতিন আমেরিকান লেখক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ তাঁর দলকে মেক্সিকো ও কিউবা সফরে ডেকেছিলেন। প্রায় তিন মাসের ছিল সেই নাটক-সফর।
‘অ্যালেফ থিয়েটার কোম্পানি’ ঘুরে দেখছে কলকাতা। পুরোপুরি আন্তর্জাতিক একটা দল। মরক্কো, জার্মানি, ব্রাজিল, ফ্রান্স, চিলি-র এক অদ্ভুত মিশেল যে! প্যারিসের ভারতীয় বাজার নিয়ে এক কমেডি বানিয়েছিলেন ওঁরা ‘দি ইন্ডিয়ান বাজার’ নামে। এখানেও সে রকম বাজার দেখার খুব শখ। কারণ দলপতির দর্শনই হল, ‘‘নাটককে সবার উপরে রাখো। সব থেকে বেশি ভালবাসো। কিন্তু তার আগে চারপাশটাকে ভালবাসা চাই।’’