দরপত্রে ‘বিধিভঙ্গ’, এখনও থমকেই ফুটব্রিজ প্রকল্প

পুরসভার দীর্ঘসূত্রতায় কার্যত আটকে গেল শহরে ফুটব্রিজ নির্মাণের কাজ। ফলে এই পুরবোর্ডের আমলে শহরে ফুটব্রিজ নির্মাণ সম্ভব হল না। শহরে বিভিন্ন জায়গায় ফুটব্রিজ তৈরির জন্য পুর-কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহ্বান করেছিলেন অনেক দিন আগেই। পদ্ধতিগত সমস্যা থাকায় সেই দরপত্র বাতিল করতে হয়।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪২
Share:

পুরসভার দীর্ঘসূত্রতায় কার্যত আটকে গেল শহরে ফুটব্রিজ নির্মাণের কাজ। ফলে এই পুরবোর্ডের আমলে শহরে ফুটব্রিজ নির্মাণ সম্ভব হল না। শহরে বিভিন্ন জায়গায় ফুটব্রিজ তৈরির জন্য পুর-কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহ্বান করেছিলেন অনেক দিন আগেই। পদ্ধতিগত সমস্যা থাকায় সেই দরপত্র বাতিল করতে হয়। ফের নতুন করে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারদের বরাত দিয়ে এই প্রকল্পের কাজ আর শুরু করা গেল না। কবে এই প্রকল্প কার্যকর হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেল।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বলেন, “শহরে ফুটব্রিজ নির্মাণের জন্য যে সমস্ত সংস্থা দরপত্রের বরাত নিয়েছিল, তাদের অনেকেই পুরসভাকে পুরনো প্রকল্পের বকেয়া টাকা জমা দেয়নি। বরাত নেওয়ার সময়ে সে কথা তারা পুরসভাকে জানায়নি। ফলে সেগুলি জানার পরে স্বাভাবিক নিয়মেই দরপত্র বাতিল হয়ে যায়। নতুন করে আবার নিয়মকানুন মেনে বরাত দিতে সময় লাগছে।”

প্রায় বছরখানেক আগেই এই প্রকল্পের জন্য দরপত্রে ত্রুটি ধরা পড়ে। তার পরেও বছরখানেকের মধ্যে এই প্রকল্প কার্যকর হল না কেন?

Advertisement

কলকাতা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের এক আধিকারিক জানান, দরপত্র পেয়ে তার খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে বছরখানেক আগেই দেখা যায় পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। যে ঠিকাদারেরা বরাত নিয়েছিলেন, তাঁদের বিষয়টি জানানো হয় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশও দেওয়া হয়। এর পরে নতুন করে বরাত দেওয়ার জন্য ওই ঠিকাদারদের কাছে আবেদন করা হয়। এই সমস্ত প্রস্তুতিতে যথেষ্ট সময় লাগে। কাজও আটকে থাকে।

অতীনবাবু বলেন, “প্রথম থেকে আমি ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের মেয়র পারিষদের দায়িত্বে ছিলাম না। গত দু’বছর এই দফতরের দায়িত্বে আসি। দায়িত্ব পেয়েই আমি ফুটব্রিজের আধুনিকীকরণ এবং দ্রুত রূপায়ণের পরিকল্পনা গ্রহণ করি। দু’টি ফুটব্রিজের বরাত দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। অনেকগুলিতে নির্মাণের ক্ষেত্রে পরিকাঠামোজনিত কিছু ত্রুটি রয়েছে। তবে সামনে পুর-নির্বাচন থাকায় এই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। নতুন বোর্ড ক্ষমতায় এসে এই প্রকল্প শেষ করবে।”

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, বেশি যানজট হওয়া এগারোটি জায়গায় রাস্তা পারাপারের জন্য ফুটব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় পুরসভা। এ ছাড়াও শহরে অনেক ফুটব্রিজ রয়েছে যেগুলির দায়িত্বে রাজ্য পরিবহণ দফতর এবং কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি কর্তৃপক্ষ রয়েছেন। সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে পুর-কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে জানান।

এই ক’টির মধ্যে দেশপ্রিয় পার্ক, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি এবং গড়িয়াহাটের কাছে একটি স্কুলের সামনে আরও একটি ফুটব্রিজের পরিকল্পনার জন্য বরাত চূড়ান্ত হয়েছে। গড়িয়া মোড়, পার্ক স্ট্রিট এবং আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের মোড়, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের কাছে লর্ডসের মোড়, মৌলালি এবং রাজাবাজার-সহ মোট ছ’টি গুরুত্বপুর্ণ জায়গায় এই পরিকলল্পনা থাকলেও পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় এই প্রকল্প নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া শহরের বাকি তিনটি জায়গা, শ্যামবাজার মোড়, দক্ষিণ কলকাতার একটি বাণিজ্যিক মল ও জওহরলাল নেহরু রোডের ডোরিনা ক্রসিংয়ে ফুটব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও পরিকাঠামোজনিত সমস্যার দরুণ তা আপাতত স্থগিত রয়েছে।

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের অনেক জায়গায় ফুটব্রিজ থাকলেও তা অনেকে ব্যবহার করেন না। অনেকেরই বক্তব্য, পুরনো পদ্ধতিতে নির্মিত সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করতে হয় বলে এই সব ফুটব্রিজ ব্যবহার করা অসুবিধা। তাই নতুন যে সব ফুটব্রিজ নির্মাণ করা হবে তাতে চলমান সিঁড়ি এবং ‘লিফ্ট’-এর ব্যবস্থা আবশ্যিক। সব নির্মাণ সংস্থাকে সে কথা বলা হয়েছে বলেও অতীনবাবু জানান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement