বেহালা শীলপাড়ার বাসিন্দা শুভজিৎ ঘোষ এবং সুচেতনা ঘোষের এক মাত্র সন্তান সম্বুদ্ধ। নিজস্ব চিত্র।
আলিপুরে সেনার কমান্ড হাসপাতাল চত্বরে জলে ডুবে মৃত্যু হল বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন একটি শিশুর। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জেরেই মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রের।
বেহালা শীলপাড়ার বাসিন্দা শুভজিৎ ঘোষ এবং সুচেতনা ঘোষের এক মাত্র সন্তান সম্বুদ্ধ ছোট থেকেই আংশিকভাবে অটিজমে আক্রান্ত। প্রায় এক বছর আগে কমান্ড হাসপাতাল চত্বরের ভিতরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের একটি স্কুলে ভর্তি করা হয় সম্বুদ্ধকে।ওই স্কুলটির পরিচালনার দায়িত্ব ‘আর্মি ওয়াইভস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর। সেনা কর্মী ছাড়াও, বেসামরিক ব্যাক্তিদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে ওই স্কুলে।
সম্বুদ্ধের এক আত্মীয় রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অন্য দিনের মতো এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দেন তথ্য প্রযুক্তি কর্মী শুভজিৎ। তিনি স্কুলে অপেক্ষা করতে চাইলে শিক্ষিকারা তাঁকে চলে যেতেবলেন। এ দিন ছিল স্কুলের বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা শেষ হওয়া পর্যন্ত শুভজিৎ স্কুলেই ছিলেন। তারপর তিনি সম্বুদ্ধের ক্লাসের শিক্ষিকা কাকলি চট্টোপাধ্য়ায়ের কাছে ছেলেকে পৌঁছে দিয়ে স্কুল ছেড়ে যান। রাজীব বলেন,“ শুভজিৎ শিক্ষিকাকে বলেও আসেন যে সম্বুদ্ধর শরীর খারাপ। তাকে যেন স্কুল বাসে তুলে দেওয়া হয়।” স্কুল থেকে বেরনোর দশ মিনিট পরেই অন্য এক অভিভাবকের ফোন পান শুভজিৎ। তাঁকে দ্রুত স্কুলে ফিরতে বলা হয়। সেখানে ফিরে তিনি জানতে পারেন সম্বুদ্ধকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে, তিনি দেখতে পান ডুবুরিরা স্কুল চত্বরের মধ্যে একটি বড় জলের ট্যাঙ্কে তল্লাশি চালাচ্ছে। খানিক পরে ওই ট্যাঙ্ক থেকেই উদ্ধার হয় সম্বুদ্ধের নিথর দেহ। সঙ্গে সঙ্গে স্কুল লাগোয়া কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে ওই ট্যাঙ্কটি ‘হাইড্রোথেরাপি’ নামে একটি বিশেষ ধরনের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত একটি ট্যাঙ্ক।
রাজীবের অভিযোগ, গোটা ঘটনা কী ঘটেছিল বা কী ভাবে শিক্ষিকাদের সামনে শিশুটি হারিয়ে গিয়ে পুকুরে পড়ে গেল তা স্পষ্ট নয়। তিনি বলেন,“স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও উত্তর দেননি। এক জন সেনা অফিসারের সঙ্গে দেখা করতে বলেন। তাঁর কাছে গেলে তিনি শিশুর বাবাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।”
পরিবারের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ বা সেনা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ন্যূনতম সমবেদনা দেখানো হয়নি। পরিবারের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছাড়া ওই দুর্ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়। তবে এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ বা আর্মি ওয়াইভস অ্যাসোসিসেয়সনের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ভাড়া ঠিক হয়ে গেল, তবে চালুর দিন ক্ষণ অজানা
আরও পড়ুন: নন ইস্যুকে ইস্যু করা হচ্ছে, মত পার্থর, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ফের উত্তাল যাদবপুর