Indian Coffee House

কফি হাউসে তছরুপে গ্রেফতার ৫ অভিযুক্ত

মূলত ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যে পরিচালন সমিতি ছিল, তাদের আমলেই আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ০৯:৩০
Share:

কফি হাউস।

এ বার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠল কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে গত কয়েক দিনে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন কফি হাউস পরিচালন সমিতির প্রাক্তন তিন সদস্যও। বাকি দু’জন কফি হাউসেই কোষাধ্যক্ষের কাজ করতেন। সুভাষ গঙ্গোপাধ্যায় ও দীপঙ্কর দাশগুপ্ত নামে ওই দুই কর্মীকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করেছেন আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার তদন্তকারীরা। সরকারি কৌঁসুলি সাজ্জাদ আলি খান জানিয়েছেন, বুধবার আদালতে তোলা হলে ধৃত সুভাষ ও দীপঙ্করকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। গত রবিবার গ্রেফতার হওয়া পরিচালন সমিতির প্রাক্তন তিন সদস্য, শেখ নাসিরুদ্দিন, পঞ্চম রাম এবং বিজয় নায়েক বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন আদালতেরই নির্দেশে।

লালবাজার সূত্রের খবর, সমবায়ের মাধ্যমে ওই কফি হাউস চালায় সেখানকার ‘কফি ওয়ার্কার্স কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’। ওই সমিতির সম্পাদক তপন পাহাড়ি ২০১৮ সালে আদালতে সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ দায়ের করেন। মূলত ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যে পরিচালন সমিতি ছিল, তাদের আমলেই আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। আদালতের নির্দেশে ওই বছরই আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ওই থানার অতিরিক্ত ওসি তীর্থঙ্কর রায়ের নেতৃত্বে সাব-ইনস্পেক্টর বৈভব শ্রফকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: বানানে নজর পুরসভার, তৈরি হবে ‘স্ক্রিনিং কমিটি’

পুলিশ জানায়, তদন্তে দেখা যায়, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের মধ্যেই ওই সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকার আর্থিক তছরুপ হয়েছে, যাতে যুক্ত ছিলেন তৎকালীন পরিচালন সমিতিরই তিন সদস্য। তাঁদের হাতেই সমিতির আর্থিক লেনদেনের পুরো দায়িত্ব দেওয়া ছিল। একই সঙ্গে পরিচালন সমিতির চেকে সই করারও অধিকার ছিল অভিযুক্তদের হাতে। কফি হাউসের দুই কোষাধ্যক্ষও তাতে জড়িত বলে তদন্তকারী দলের সন্দেহ হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা ‘সেল্ফ’ চেক দিতেন ওই দুই কোষাধ্যক্ষকে। তাঁরা ব্যাঙ্কে সেই চেক জমা দিয়ে টাকা তুলে নিতেন। যা পরে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করা হত বলে পুলিশের দাবি। পুলিশের এক কর্তা জানান, অভিযুক্তেরা এক-এক বারে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার চেক জমা দিয়ে টাকা তুলতেন। ওই আর্থিক বছরে অন্তত একশো বার চেক জমা দিয়ে সমবায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে হিসেব বহিভূর্ত ভাবে টাকা তুলে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে

পুলিশের দাবি।

পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০১৬ সালে বর্তমান পরিচালন সমিতি দায়িত্ব গ্রহণ করে। তখনই তাদের নজরে আসে আর্থিক তছরুপের বিষয়টি। এর পরেই অডিটে সব কিছু ধরা পড়ে যাওয়ায় তারা আদালতের মাধ্যমে পুলিশের দ্বারস্থ হয়।

তদন্তকারীদের দাবি, ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া চেকের সূত্র ধরেই আগের পরিচালন সমিতির তিন জনকে চিহ্নিত করা হয়। তাঁরা দীর্ঘদিন গা-ঢাকা দিলেও শেষরক্ষা হয়নি। রবিবার প্রথমে শেখ নাসিরুদ্দিনকে গ্রেফতার করার পরেই বাকিদের সন্ধান মেলে। পুলিশের দাবি, ধৃত তিন জনই জেরার মুখে কোষাধ্যক্ষদের জড়িত থাকার বিষয়টি জানান। এর পরে মঙ্গলবার তাঁদেরও গ্রেফতার করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement