ওই বহুতলের সামনে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
একটি বহুতলের তিন তলার একটি ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে আগুনের আতঙ্ক ছড়াল পোস্তার কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিটে। বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে দমকলের চারটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকল কর্মীরা। তবে এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। বহুতলটি ভেঙে পড়া বিবেকানন্দ উড়ালপুলের পাশেই।
দমকল সূত্রে খবর, আট তলা আবাসনটির তিন তলার ওই ঘরে কলকাতার একটি বিখ্যাত মিষ্টির দোকানের গুদাম রয়েছে। দমকল কর্মীরা জানান, ওই ঘরটিতে প্রচুর মিষ্টি প্যাকেজিংয়ের সামগ্রী মজুত ছিল। তাতেই কোনও ভাবে আগুন ধরে গিয়ে ধোঁয়া বের হতে শুরু করে।
দমকলের সদর কার্যালয়ের ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার কমলকুমার নন্দী বলেন, ‘‘আমরা এসে দেখি পুরো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে। উপরে উঠে দেখি, তিন তলার ঘরটিতে মজুত করা প্যাকেজিং সামগ্রীতে আগুন জ্বলছে। তবে কী থেকে আগুন লাগল তা তদন্তের আগে বলা সম্ভব নয়।’’ দমকল কর্মীরা জানান, এই বহুতলটির নিজস্ব কোনও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। অথচ আবাসনটির নীচে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মার্কেটও রয়েছে। দোতলায় একটি শাড়ির দোকান রয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বস্তির বৃষ্টিতে শান্তি রাজ্যে
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, বড়বাজার এবং পোস্তা এলাকার অনেক আবাসন বসবাসের জন্য তৈরি হলেও সেই আবাসনের বিভিন্ন তল বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হয়। ওই আবাসনের বাসিন্দা মোহন শা বলেন, ‘‘পুরো বড়বাজার এলাকায় বহু বাড়ি এই রকম জতুগৃহ হয়ে রয়েছে। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয় না।’’
খবর পেয়েই ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিজেপির বিজয় ওঝা বলেন, ‘‘বড়বাজার এবং পোস্তা এলাকায় আগুন লাগলে বড় সমস্যা হচ্ছে জলের। এই এলাকার তারসুন্দরী পার্কে একটি পুরনো জলাধার রয়েছে। সেটি সংস্কার করার জন্য পুরসভার কাছে অনেক বার আবেদন করেছি। পুর কর্তৃপক্ষ সেই কথা কানে তোলেননি।’’ স্থানীয় কংগ্রেস নেতা শিবজি পাণ্ডেও অভিযোগ করে বলেন, ‘‘বড়বাজারের বহুতলগুলির জন্য একটি পৃথক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু পুরসভা সেই বিষয়টিকে কখনওই গুরুত্ব দেয়নি।’’
কলকাতা পুরকর্তৃপক্ষ জানান, পুরসভার ১৯৮০ সালের ৪১৬ ধারা অনুযায়ী বাসস্থানের জন্য ব্যবহৃত কোনও জায়গা বাণিজ্যিক জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। সেই আইন মোতাবেক শহরে বাসস্থানের জন্য ব্যবহৃত অনেক বাড়ি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। তবে এই আইন পরিবর্তন না করে বাণিজ্য করলে তা অপরাধ। পুরসভা জানতে পারলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়। তবে, নির্দিষ্ট ভাবে এই বাড়ির ব্যাপারে কী ঘটেছিল তা না দেখে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে এক পুর আধিকারিক জানান।