বহুতলে আগুন, বার্তা এল ফোনে

হোয়াট্সঅ্যাপে বার্তা ‘আগুন লেগেছে, বেরিয়ে পড়ুন’। লিফটের অপেক্ষা না করে আতঙ্কে সিঁড়ি দিয়ে হু়ড়োহুড়ি করে নেমে আসেন আট থেকে আশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০১:২১
Share:

আতঙ্ক: আগুনের খবরে উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা। শুক্রবার, ক্যামাক স্ট্রিটের সেই বহুতলে। নিজস্ব চিত্র

কেউ অফিস যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কেউ আবার বাচ্চাকে নিয়ে সবে স্কুল থেকে ফিরেছেন। এমন সময়ে হোয়াট্সঅ্যাপে বার্তা ‘আগুন লেগেছে, বেরিয়ে পড়ুন’। লিফটের অপেক্ষা না করে আতঙ্কে সিঁড়ি দিয়ে হু়ড়োহুড়ি করে নেমে আসেন আট থেকে আশি।

Advertisement

শুক্রবার ২৬, শেক্সপিয়র সরণির একটি বহুতলের ঘটনা। ১৬ তলা ওই বাড়ির দোতলায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্যামাক স্ট্রিট শাখা। দমকল সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল ন’টা চল্লিশ নাগাদ সেই ব্যাঙ্কেই আগুন লাগে। বাসিন্দাদের কাছে সেই খবর যেতেই ছড়ায় আতঙ্ক।

দমকলের ছ’টি ইঞ্জিন ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় আগুন নেভায়। দোতলার জানলার কাচ ভেঙে ল্যাডার ব্যবহার করে দমকলকর্মীরা ভিতরে যান। দ্রুত আগুন নিভলেও এলাকা ঘিঞ্জি হওয়ায় ধোঁয়ামুক্ত করতে সমস্যা হয়। বাসিন্দাদের উদ্ধার করতে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরাও ঘটনাস্থলে যান। এক দমকল কর্তা জানান, ঘটনায় হতাহতের খবর নেই। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছিল।

Advertisement

ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে নিরাপত্তারক্ষীরা ব্যাঙ্কের দরজা খুলে এসি চালু করলে একটি মেশিন জ্বলে ওঠে ও তার পরে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে। বেশ কিছু নথিপত্র পুড়ে যায়। ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সুনাকার নায়েক বলেন, ‘‘অফিস বন্ধের সময়ে সব সুইচ অফ করে যাওয়া হয়। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণও হয়। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, বুঝতে পারছি না।’’

এ দিনের ঘটনায় আতঙ্কে বাসিন্দারা। বহুতলের প্রথম তিনটি তলা ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত। চতুর্থ থেকে ১৬ তলা পর্যন্ত বসতি। প্রায় ৬০টি পরিবার ওই বহুতলে থাকে। এ দিন দোতলা থেকে ধোঁয়া দেখা দিতেই বাসিন্দাদের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে খবর দেওয়া হয়। পিছনের সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসেন বাসিন্দারা।

বসতির দিকে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও বিল্ডিংয়ের যে তিনটি তলা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার হয়, সেটা কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, বহুতলের দু’টি প্রবেশ দ্বার আছে। পিছনের দিকের দরজা আবাসিকেরা ব্যবহার করেন আর সামনের দরজা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হয়। ফলে সেই জায়গার নিরাপত্তা ও সুরক্ষার দিকে কত নজর রাখা হয়, সে বিষয়ে বাসিন্দাদের কিছু জানানো হয় না। বহুতলের বাসিন্দা অলক ছিবড়েগোর বলেন, ‘‘বাসিন্দারা রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে নজরদারি করেন। কিন্তু ব্যবসার কাজে যে দিকটি ব্যবহৃত হয়, সেখানে কী ব্যবস্থা সেটা আমরা কিছুই জানি না। আমাদের পুরো বিষয়টি জানালে স্বস্তি পাব।’’ আর এক বাসিন্দা সবিতা সিংহ বলেন, ‘‘দমকল ঠিক সময়ে না-এলে কী যে হতো! এমন বিপদ সামাল দিতে কী ব্যবস্থা আছে, জানতে চাই।’’ বহুতলের আবাসিক কমিটির সভাপতি নীরব শাহ বলেন, ‘‘সবাই সুরক্ষিত আছেন। আশা করি, সমস্যা থাকলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’’

এ দিন ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় কাউন্সিলর সুস্মিতা ভট্টাচার্য মুখোপাধ্যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন। পরে তিনি বলেন, ‘‘দমকল বাহিনী বিষয়টি খতিয়ে তদন্ত করে দেখছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement