ইদের বাজারে আগুন-আতঙ্ক নিউ মার্কেটে

বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ ইদের ভরা বাজারে আগুন লেগে এ ভাবেই আতঙ্ক ছড়াল নিউ মার্কেটে। দমকল সূত্রের খবর, ৩৫ নম্বর স্টলে আগুন লাগে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৮ ০২:৫৩
Share:

তৎপর: পার্ক স্ট্রিটের একটি বহুতলে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

লাল রঙের বিছানার চাদর পছন্দ করে সবে দোকান মালিকের সঙ্গে দরদাম শুরু করেছিলেন রাজাবাজারের বাসিন্দা মুদাস্‌সর আহমেদ সিদ্দিকি। তাঁর স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে ঢুকেছিলেন পাশের দোকানে। হঠাৎ কানে আসে বিস্ফোরণের শব্দ, ‘আগুন আগুন’ চিৎকার। মুদাস্‌সরের স্ত্রী দেখেন, চাদর হাতে নিয়েই ছুটছেন স্বামী। পিছু নেন তিনিও।

Advertisement

বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ ইদের ভরা বাজারে আগুন লেগে এ ভাবেই আতঙ্ক ছড়াল নিউ মার্কেটে। দমকল সূত্রের খবর, ৩৫ নম্বর স্টলে আগুন লাগে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন আধঘণ্টায় আগুন নেভায়। কেউ হতাহত না হলেও ইদের ভরা বাজারে এমন অগ্নিকাণ্ডে আতঙ্ক ছড়ায়। মুদাস‌্‌সর বলেন, ‘‘যে দোকানে ছিলাম সেখানেই আগুন লাগে। প্রথমে কয়েকটি কাপড়ে আগুন ধরে যায়। একটা পোড়া কাপড়ের বস্তা আমার হাতের সামনেই পড়ে। কোনও মতে বেঁচে গিয়েছি।’’

দমকল সূত্রের খবর, ওই স্টলে চাদর বিক্রি হত। ঘটনার সময়ে স্টলের মালিক সুলোচনা গুপ্ত না থাকলেও তাঁর মেয়ে যামিনী গুপ্ত ছিলেন। তিনি দমকলকে জানিয়েছেন, হঠাৎ বিদ্যুতের বক্সে আওয়াজ হয়। সেখান থেকেই আগুন লাগে। দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিটের জেরেই আগুন লাগে। এক দমকলকর্মী বললেন, ‘‘ইদের বাজারের ভিড়ের মধ্যে আমরা সময়ে না পৌঁছতে পারলে বড় বিপদ ঘটতে পারত।’’ প্রশ্ন উঠছে, দোকানটিতে অগ্নিবিধি মানা হয়েছিল কি? যদিও যামিনী এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের গাফিলতি নেই।’’ পুলিশ জানিয়েছে, দমকল ওই স্টলের অবস্থা দেখে রিপোর্ট দিলে মামলা করা হবে কি না ভাবা হবে। প্রয়োজনে দমকল নিজেও মামলা করতে পারে।

Advertisement

এ দিনই দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ মানিকতলার একটি ব্যাটারি কারখানায় আগুন লাগে। পুলিশ জানিয়েছে, এপিসি রোডের ওই কারখানা থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন স্থানীয়েরা। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন আগুন নেভায়। ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি এলাকায় ব্যাটারির কারখানা কেন রয়েছে, এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

পরে রাত পৌনে ৭টা নাগাদ ১০৩ নম্বর পার্ক স্ট্রিটের এক বাণিজ্যিক বহুতলের চার তলার একটি দোকানে আগুন লাগে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বহুতলে একাধিক পোশাক সামগ্রীর দোকান রয়েছে। এ দিন দমকলের ৬টি ইঞ্জিন ঘণ্টা দেড়েকের চেষ্টায় আগুন নেভায়। পৌঁছয় কলকাতা পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এক ব্যক্তি চারতলায় ধোঁয়ার মধ্যে আটকে পড়লে তাঁকে জানলা দিয়েই নামানো হয়। পরে ঘটনাস্থলে যান দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়।

দমকল কর্মীদের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছিল। তবে স্থানীয়দের দাবি, দমকল ও পুলিশকর্মীদের তৎপরতায় আগুন ছড়াতে পারেনি। পুলিশ সূত্রের খবর, বহুতলটিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা মজুত ছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement