আগুন নেভাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে দমকলের ইঞ্জিন। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
ফের আগুন লাগল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তবে আগুন বড় আকার নেয়নি, কোনও হতাহতের খবরও নেই। দমকল সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ মেডিক্যাল
কলেজের গ্রিন বিল্ডিংয়ের তেতলায় আগুনের খবর আসে। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। হাসপাতাল সূত্রের দাবি, দমকল পৌঁছনোর আগে নিরাপত্তারক্ষীরাই আগুন আয়ত্ত্বে এনে ফেলেছিলেন। গ্রিন বিল্ডিংয়ে মেডিক্যাল কলেজের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) রয়েছে। আগুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় রোগীদের আত্মীয়দের মধ্যে।
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে মেডিক্যাল কলেজের ফার্মাসি বিভাগে বিধ্বংসী আগুন লেগেছিল। ২০১১ সালের আমরি কাণ্ডে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন নব্বইয়ের বেশি রোগী। মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘রক্ষী ও কর্তব্যরত চিকিৎসকদের তৎপরতায় এ দিন বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে।’’
হাসপাতাল সূত্রের খবর, তেতলায় নার্সদের পোশাক বদলের ঘরের কম্পিউটারে আগুন লাগে। বিপদঘণ্টি শুনে রক্ষী ও চিকিৎসকেরা ‘ফোম’ ছড়িয়ে দেন। প্রবল ধোঁয়া হওয়ায় জানলার কাচ ভেঙে ধোঁয়া বেরনোর পথ করে দেন তাঁরা। এ দিন যে রক্ষীরা এই কাজ করেছেন, তাঁদের মধ্যে দু’জন আগুন নেভানোয় বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
আগুনের খবর পেয়েই গ্রিন বিল্ডিংয়ের তলায় ভিড় করেন রোগীর পরিজনেরা। তাঁদেরই এক জন হাড়োয়ার ঝর্না বিশ্বাস। তাঁর স্বামী সন্তোষ বিশ্বাস লিভারের সংক্রমণ নিয়ে সিসিইউয়ে ভর্তি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নীচে বসে ছিলাম। আচমকা সাইরেন (আগুনের বিপদঘণ্টি) বেজে ওঠে। হাসপাতালের কর্মীরা ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। আমার স্বামীর নড়াচড়ার অবস্থা নেই। আমি উপরে গিয়ে দেখি, চার দিক ধোঁয়ায় ভর্তি। আমার স্বামীর ঘরের কাচের জানলায় সামান্য ফাঁক ছিল। সেখান থেকেও ধোঁয়া ঢুকছিল। কিছু ক্ষণ পরেই আমাদের নামিয়ে আনা হয়।’’
রাত আটটা নাগাদ দমকলের ইঞ্জিন দু’টি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যায়। তখনও গ্রিন বিল্ডিংয়ের সামনে উদ্বিগ্ন পরিজনদের ভিড়। রাত ন’টার পরে রোগীর পরিজনদের ফের ভিতরে যেতে অনুমতি দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।