শো চলাকালীনই হঠাৎ আগুন লেগে যায় নন্দনের প্রোজেকশন-কক্ষে। খবর যায় দমকলে। তারা আসার আগেই অবশ্য কর্মচারীরা আগুন নিভিয়ে ফেলেন। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র
অ্যাকাডেমির পর এ বার নন্দন।
সপ্তাহ তিনেক আগেই নাটক চলাকালীন আগুনের জেরে তীব্র আতঙ্ক ছড়ায় অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এর প্রেক্ষাগৃহে। হল থেকে বেরোতে নাকাল হন দর্শক-কলাকুশলীরা। অনেকটা একই ভাবে সোমবার নন্দনে সিনেমা চলাকালীন আগুনে ‘শো’ ভণ্ডুল হওয়ার ঘটনা ঘটে। ধোঁয়ায় হুড়োহুড়ি করেই বেরোন দর্শকেরা। তবে একাধিক দরজা খোলা থাকায় আতঙ্ক বাড়তে পারেনি।
শর্ট সাকির্টের জেরেই আগুন লাগে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে দমকল। দমকলকর্তাদের দাবি, নন্দনে চারতলার প্রোজেকশন রুমে দেওয়ালের ভিতরে বিদ্যুতের লাইনের একটি সংযোগস্থলেই আগুনের উৎস। দেওয়াল থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। তবে কর্মচারীরাই আগুন নেভান। পরে দমকল এসে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।
পুলিশ জানায়, তখন বিকেল ৩টে ২৫। নন্দন (১) প্রেক্ষাগৃহে ‘বুনো হাঁস’ শেষ হতে বাকি মিনিট পাঁচেক। এমন সময়ে ‘আগুন, আগুন’ চিৎকারে হলে আতঙ্ক ছড়ায়। ৯৮০টি আসন বিশিষ্ট নন্দনে শ’পাঁচেকের বেশি লোক সিনেমা দেখতে ঢুকেছিলেন। কটু গন্ধে কারও কারও শ্বাসকষ্টও শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে কেউই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েননি।
এর আগে অ্যাকাডেমির ঘটনাটিতে শহরের নাট্যচর্চার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি হলে আগুন নেভানোর ব্যবস্থার চরম ঢিলেঢালা চেহারাটাই বেআব্রু হয়ে গিয়েছিল। এ যাত্রা, দমকল কর্তারা কিন্তু নন্দনের পরিস্থিতি দেখে মোটের উপর সন্তুষ্ট। দমকলের অধিকর্তা গৌরপ্রসাদ ঘোষ ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই বলেন, “নন্দনের আগুন নেভানোর ব্যবস্থা ঠিকঠাকই ছিল। আগুন নেভানোর পরে ওই হলের জলের লাইন ব্যবহার করেই জল ঢেলে আগুনের উৎসস্থল ঠান্ডা করা হয়।” এই ধরনের বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটকেও অস্বাভাবিক ঘটনা বলে দেখছেন না দমকলের কর্তারা। তবে গৌরবাবু বলেন, “নন্দন কর্তৃপক্ষকে পি ডব্লিউ ডি-(ইলেকট্রিক্যাল)-এর ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে সব তার ভাল ভাবে পরীক্ষা করিয়ে নিতে বলেছি। ওঁরা ছাড়পত্র দিলে ফের হলে সিনেমা শুরু করা উচিত।” নন্দনের সিইও যাদব মণ্ডলও প্রেক্ষাগৃহের কারিগরি দিকগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। আজ, মঙ্গলবার দুপুরে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা নন্দনে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। ফলে সিনেমা প্রদর্শন এখন বন্ধ থাকার কথা।
এ দিন ছবির শো ব্যাহত হওয়ায় দর্শকদের টিকিটের দাম ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ‘বুনো হাঁস’-এর সন্ধের শো’টিও বাতিল করে দেওয়া হয়। ছবিটির পরিচালক অনিরুদ্ধ চৌধুরী বলছিলেন, “যা ঘটেছে তা খুবই দুভার্গ্যজনক। বাংলা ছবির প্রদর্শনে নন্দন সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ। নন্দনের শো বাতিল হওয়াটা ছবিটির জন্য ক্ষতিকারক।”