প্রতীকী ছবি।
বৃদ্ধার ফ্ল্যাটের একটি ঘর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে সন্দেহ হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁরা ওই বৃদ্ধাকে ফোন করেন। কিন্তু তাঁর কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এর পরে খবর দেওয়া হয় দমকল এবং স্থানীয় থানায়। দরজা ভেঙে দেখা যায়, খাটের উপরে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বৃদ্ধা। তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, বাড়ির মধ্যেই পুড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধার। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গরফা থানা এলাকার ইস্টার্ন পার্ক ফার্স্ট রো-এ। মৃতার নাম তপতী সরকার (৭৪)। পুলিশ জানায়, একটি বহুতলের ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন তপতীদেবী। তাঁর এক মেয়ে গড়িয়াহাটের কর্নফিল্ড রোডে থাকেন। মাঝেমধ্যেই তিনি এসে মায়ের কাছে থাকতেন। বাকি সময়ে বৃদ্ধা একাই থাকতেন সেখানে।
পুলিশ জানায়, বৃদ্ধার মৃত্যুতে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। কিন্তু কী ভাবে ফ্ল্যাটে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। শুক্রবার আগুন লাগার কারণ খুঁজতে ঘটনাস্থলে যায় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল। সঙ্গে ছিল পুলিশ। ঘর থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছে বিশেষজ্ঞ দলটি। ওই বৃদ্ধা যে বিছানায় শুয়ে ছিলেন, সেটি পুরো পুড়ে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধা আর্থ্রাইটিসে ভুগছিলেন। তার জন্য তিনি হট প্যাড ব্যবহার করতেন। তাঁর ঘর থেকে পোড়া হট প্যাড উদ্ধার করা হয়েছে। সেটির তারটি পুড়ে গিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে দমকল এবং বিশেষজ্ঞদের অনুমান, বৃদ্ধা ওই হট প্যাডটি চালু রেখেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। অতিরিক্ত গরমে সেটি পুড়ে যায়। তার থেকেই বিছানায় আগুন লেগে অগ্নিদগ্ধ হন তিনি। ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, পুড়ে গিয়েই ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে, আগুনের ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, তপতীদেবীর দেহে বাইরে থেকে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। ফরেন্সিক রিপোর্ট মিললে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবেবলে ওই অফিসার জানিয়েছেন। মৃতার পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর।