কলকাতায় নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আর্থিক প্রতারণার শিকার অয়ন দেবনাথ নামে এক ব্যক্তি
কলকাতায় নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আর্থিক প্রতারণার শিকার অয়ন দেবনাথ নামে এক ব্যক্তি। স্বাস্থ্য কমিশনেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তভার লালবাজারের গোয়েন্দা শাখার হাতে তুলে দেবে স্বাস্থ্য কমিশন।
গত বছর এপ্রিল মাসে বাবা নারায়ণ দেবনাথ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন অয়ন। কিন্ত ওই হাসপাতালে শয্যা না থাকায় ওই হাসপাতালের অ্যাডমিশন সেল থেকে অন্য একটি হাসপাতালের নম্বর দেওয়া হয়। ওই নম্বরে ফোন করা হলে টলিগঞ্জের এক নার্সিংহোমের ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি কথা বলেন অয়নের সঙ্গে। তাঁর কথা শুনেই বাবাকে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করান অয়ন।
প্রথমে রোগীর পরিবারের তরফে ১৫ হাজার টাকা এবং পরে আরও ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয় হাসপাতাল। ওই নার্সিংহোমকে সব মিলিয়ে মোট ৭৫ হাজার টাকা ক্রেডিট কার্ডে দিয়েছিল অয়নের পরিবার। এর পাঁচ দিন পর রোগী মারা গেলে আরও ৭৫ হাজার টাকা চেক হিসেবে লিখে দেওয়া হয়। কিন্তু ম্যানেজার পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তিকেই চেক দিয়েছিলেন অয়ন। পেয়েছিলেন একটি রসিদও।
অর্থাৎ, সব মিলিয়ে বাবার চিকিৎসায় অয়নের খরচ মোট এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। কিন্তু বিমা কোম্পানি চিকিৎসার খরচের হিসেব চাইতেই ধরা পড়ে ওই জালিয়াতির কারবার। ওই নার্সিংহোমের সঙ্গে যোগাযোগ করে অয়ন জানতে পারেন, তাঁর বাবার চিকিৎসার বিল হয়েছিল ৭৫ হাজার ২৪২ টাকা। শেষ কিস্তিতে অয়ন যে চেক লিখে দিয়েছিলেন, তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাতে পাননি। শুধু তাই নয়, ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে যিনি কথা বলেছিলেন, তাঁকে চেনেনই না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই অভিযোগ পেয়ে স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা জালিয়াতি। এর সঙ্গে অনেকেই জড়িত থাকতে পারেন। যাঁরা জড়িত আছেন, তাঁদের সামনে আসা উচিত।’’
এ ছাড়াও, বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল স্বাস্থ্য কমিশন। সাত ঘণ্টা ভর্তি থাকার জন্য রোগীর পরিবারকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বিল ধরিয়েছিল ওই হাসপাতাল। হাসপাতালের বক্তব্য, প্যাকেজ হিসেবে ভর্তি হয়েছিলেন ওই রোগী। ৫ মিনিট ভর্তি থাকলেও ওই টাকাই দিতে হত ওই পরিবারকে।
এ বিষয়ে কমিশনের বক্তব্য, ‘‘এই ধরনের প্যাকেজ মানা সম্ভব না। রোগীর পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে। সেই সঙ্গে সঠিক বিলও দিতে হবে।’’