Jadavpur University

যাদবপুরে অর্থসঙ্কটের জের, প্রেশার কুকার দিয়ে তৈরি গবেষণার যন্ত্র!

যাদবপুরের অর্থকষ্টের অন্যতম কারণ হিসাবে বার বারই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অর্থসাহায্যের পরিমাণ কমে আসার বিষয়টি উঠে এসেছে।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২২ ০৮:২৬
Share:

প্রেশার কুকার দিয়ে তৈরি সেই যন্ত্র। নিজস্ব চিত্র

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সঙ্কট নিয়ে বহু বার আওয়াজ উঠেছে ক্যাম্পাসের অন্দরেই। ইতিমধ্যে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস প্রাক্তনীদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। লিখেছেন রাজ্য সরকারকেও। সেই অর্থকষ্ট কতটা, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসে পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক ল্যাবরেটরিতে গিয়ে তার প্রমাণ মিলল। অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় দামী যন্ত্র কিনতে না পেরে তুলনামূলক অনেক কম দামে তৈরি করা হয়েছে এক যন্ত্র, যাতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রেশার কুকার!

Advertisement

ইসরোর পরবর্তী চন্দ্র অভিযানের মহাকাশযান নিয়ে গবেষণা চলছে যাদবপুরের এই পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। এই বিভাগেই রয়েছেন দুই শিক্ষক-গবেষক, যাঁদের নাম আছে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত বিশ্বের দুই শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায়। অথচ, আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় এ ভাবেই গবেষণার কাজ চালাতে হচ্ছে সেই বিভাগকে।

পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এই যন্ত্রটির নাম ‘কন্ট্রোলড এনভায়রনমেন্ট চেম্বার’। ওই ল্যাবরেটরির দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক রঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন জানান, এই যন্ত্রটির আসল দাম ১৮-২০ লক্ষ টাকা। দেশের আইআইটিগুলিতে বিদেশ থেকে আনানো, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই যন্ত্র থাকে। কিন্তু অর্থসঙ্কটের কারণে ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ব্যয় করে কলকাতাতেই দেশীয় পদ্ধতিতে এটি তৈরি করা হয়েছে। এই বিভাগের ছাত্ররাই প্রেশার কুকার ইনডাকশন হিটারে বসিয়ে বাষ্প তৈরি করার পথ বার করেছেন। রঞ্জন বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে এই যন্ত্রের কার্যক্ষমতা এবং নিরাপত্তাজনিত বিষয় যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, সে দিকেও লক্ষ রাখতে হয়েছে।’’

Advertisement

যাদবপুরের অর্থকষ্টের অন্যতম কারণ হিসাবে বার বারই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অর্থসাহায্যের পরিমাণ কমে আসার বিষয়টি উঠে এসেছে। রঞ্জনও জানালেন, ইউজিসির অর্থসাহায্যের স্রোত একেবারে শুকিয়ে গিয়েছে। শিক্ষকেরা গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে যেটুকু টাকা আনতে পারছেন, তা দিয়েই গবেষণার কাজ চালাতে হচ্ছে। এর ফলে দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন ভাবেই চালাতে হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার কাজ। রঞ্জনের কথায়, ‘‘শুধু এই ল্যাবরেটরিই নয়। খোঁজ নিলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ল্যাবরেটরিতেই এমন উদ্ভাবনী কাজের উদাহরণ পাওয়া যাবে। আর তা সম্ভব হচ্ছে আমাদের ছাত্র-গবেষকদের তীক্ষ্ণ মেধার জোরে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement