সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের মাঠে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা শুরুর আগে পরিবেশ নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন অনেকে। ফাইল ছবি।
বইমেলার মাঠের চেনা ছবিটা কি ফিরতে চলেছে?
সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের মাঠে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা শুরুর আগে পরিবেশ নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন অনেকে। কাল, সোমবার দুপুর ২টোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এর পরে মঙ্গলবার থেকে বইমেলার মাঠে শব্দদৈত্যের দাপাদাপির আশঙ্কা করছে নানা মহল। বইমেলার উদ্যোক্তা প্রকাশক ও বই বিক্রেতাদের গিল্ড, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং বিধাননগর পুরসভাকে এ নিয়ে পরিবেশকর্মীদের একটি মঞ্চের তরফে নব দত্ত সতর্ক করে দিয়েছেন।
পরিবেশকর্মীদের দাবি, প্রতি বছরই কিছু কর্পোরেট এবং ধর্মীয় সংস্থা মাইক নিয়ে কুইজ়, গানবাজনার আয়োজন করে, ফলে আশপাশের এলাকায় কথা বলাও কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। গিল্ডের সভাপতিসুধাংশুশেখর দে বিষয়টি খেয়াল রাখার আশ্বাস দিয়েছেন। শব্দ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে সাউন্ড লিমিটর ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। বইমেলায় জঞ্জাল ফেলা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে। বইমেলা কেন এ বারও প্লাস্টিকমুক্ত নয়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও উদ্যোক্তাদের দাবি, বই বিক্রেতাদের অনেকেই এখন প্লাস্টিকের ব্যাগ দেন না। মাঠে চটের সামগ্রীর দোকানও থাকছে। বইমেলার মাঠ তুলনায় বেশি সাফসুতরো থাকে বলে দাবি করেও আয়োজকেরা বলছেন, কোথায় কাগজের প্লেট আর কোথায় কাগজ ফেলতে হবে, সে বিষয়ে সাধারণ মানুষের সচেতনতায় খামতি আছে।
বইমেলার জন্য সল্টলেকের এই তল্লাটে কয়েকটি স্থায়ী পরিকাঠামো নির্মিত হয়েছে। চারটি নজর-মিনারের (ওয়াচ টাওয়ার) উপর থেকে মাঠে নজর রাখতে পারবে পুলিশ। এ ছাড়া, করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডের দিকে, সাত নম্বর গেটের কাছে পুলিশ, দমকলের স্থায়ী কন্ট্রোল রুমও থাকবে। গিল্ডের স্থায়ী অফিসেই পরে স্টলের জন্য প্রকাশকদের লটারি করা যাবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা। গিল্ডের স্টলের সংখ্যা এ বার রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে লিটল ম্যাগাজ়িনের প্যাভিলিয়নের পাশে কয়েকটি গাছতলার বেদির উপরে ৫০ বর্গফুটের ৫০টি স্টলও রয়েছে। বইমেলার রিং রোডের পাশে ফুড কোর্টের কয়েকটি দোকানের জন্য রান্নার জায়গা করে দিয়েছেন মেলা কর্তৃপক্ষ।
গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় জানান, বইমেলায় ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ দিবস এবং ৭ ফেব্রুয়ারি স্পেন দিবস পালিত হবে। স্পেনের সঙ্গীতশিল্পীদের দল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরেও গানবাজনার অনুষ্ঠান করবে। ৯, ১০, ১১ ফেব্রুয়ারি বইমেলার সাহিত্য উৎসব। বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থিম দেশ স্পেনের তরফে সংস্কৃতি মন্ত্রকের বই এবং বই পড়া প্রসার বিষয়ক দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল মারিয়া হোসে গালভেজ সালভাদোর, স্প্যানিশ সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনস্তিতুতো সেরভান্তেস-এর কর্তা লুইস গার্সিয়া মন্তেরো এবং এ দেশে স্পেনের রাষ্ট্রদূত হোসে মারিয়া রিদাও উপস্থিত থাকবেন। পরিবেশবান্ধব সামগ্রী দিয়ে স্পেনের প্যাভিলিয়নটি প্রায় তৈরি। মাদ্রিদ থেকে আসা স্থপতি পাবলো গঞ্জালেজ বললেন, “প্রকৃতি এবং বইয়ের পাতায় জ্ঞানের দিশা পরস্পরের পরিপূরক— এই বার্তাই দেবে প্যাভিলিয়ন।”