প্রতীকী ছবি।
জামাইয়ের দাবি মতো ‘পণ’ না-দেওয়ায় বাবার দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিল মেয়ে! সল্টলেকের দত্তাবাদের ওই ঘটনায় রবিবার মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাবা।
পুলিশের কাছে দত্তাবাদের বাসিন্দা সমীর সর্দার দাবি করেছেন, আট মাস আগে প্রেম করে সুরঞ্জিত বরকে বিয়ে করেছিলেন তাঁর মেয়ে রূপা সর্দার। দু’জনেরই এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়ার কথা ছিল। সমীরের দাবি, বিয়ের ক’দিন পরে করুণাময়ী-কাঁকুড়গাছি রুটে অটো চালানোর পারমিট সহ শ্বশুরের কাছে নতুন অটো দাবি করেন সুরঞ্জিত। সমীর জানিয়ে দেন, নতুন অটো এবং পারমিটের জন্য টাকা দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। শ্বশুর রাজি না হওয়ায় রূপাকে বাপেরবাড়িতে রেখে যান সুরঞ্জিত। তাতেও কাজ না হওয়ায় পরদিন স্ত্রীকে নিয়ে চলে যান। কিন্তু টাকার দাবি থেকে সরেননি।
দত্তাবাদেই একটি ছোট দোকান রয়েছে সমীরের। তাঁর অভিযোগ, নতুন অটো, নগদ চার লক্ষ টাকা এবং সোনার গয়না চেয়েছিলেন মেয়ে-জামাই। তা নিয়ে নতুন করে অশান্তি বাধে। গত বৃহস্পতিবার বাদানুবাদ তীব্র আকার ধারণ করলে বাবার দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেন রূপা। বিবাদ মেটাতে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর নির্মল দত্তের কাছে যান সমীর। সেখানেও মীমাংসা না হলে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। সমীরের অভিযোগের ভিত্তিতে সুরঞ্জিত ও রূপাকে আটক করে পুলিশ।
যদিও পণ চাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন সুরঞ্জিত এবং রূপা। সুরঞ্জিত বলেন, ‘‘আমাদের সম্পর্কের কথা জানাজানি হওয়ার পরে রূপার বাবা জোর করে কালীঘাটে বিয়ে দেন। আমরা পরীক্ষা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু চাপ তৈরি করে বিয়ে দেওয়া হল।’’ রূপার দাবি, বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় সুরঞ্জিতকে অটো কিনে দেওয়ার কথা বলেছিলেন সমীরই। এখন পণ চাওয়ার অভিযোগ করছেন। রূপার কথায়, ‘‘দু’মাসের মাথায় বাবা ঘর থেকে বার করে দিল। শ্বশুর-শাশুড়ি থাকতে দিলেও খাওয়ার খরচ নিজেদের জোগাড় করতে বলেছেন।’’ রূপার দাবি, এই পরিস্থিতিতে রাগের মাথায় তিনি বাবার দোকানে তালা ঝুলিয়েছেন।
মেয়ের বক্তব্য প্রসঙ্গে সমীর বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য তো আমিও বলেছিলাম। শোনেনি। শ্বশুরবাড়িতে ওর উপরে চাপ দিচ্ছে। তাঁরা যা বলছেন, মেয়ে সেটাই করছে। ওদের দাবি মানার সামর্থ্য আমার নেই। প্রশাসনের কাছে আর্জি, দোকান যাতে সুষ্ঠু ভাবে খুলতে পারি সেই ব্যবস্থা করুন।’’