দুর্ঘটনার পরে এলাকায় পুলিশি তৎপরতা। (ইনসেটে) নিখাত আরা এবং আব্দুল সামাদ। রবিবার রাতে, শিয়ালদহ উড়ালপুলের কাছে। নিজস্ব চিত্র
বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক তরুণী ও তাঁর বাবার। গুরুতর আহত হয়েছেন তরুণীর মা। রবিবার রাত পৌনে আটটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ উড়ালপুলে। মৃতদের নাম নিখাত আরা (২২) ও আব্দুল সামাদ (৫০)। তাঁদের বাড়ি মধ্য কলকাতার গিরিবাবু লেনে। আব্দুলের স্ত্রী নুরজাহান বেগম এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর ডান পায়ে চোট লেগেছে।
পরিজনেরা জানিয়েছেন, স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে এ দিন আব্দুল এন্টালির মতিঝিলে গিয়েছিলেন। মোটরবাইকে সেখান থেকে যাচ্ছিলেন হাতিয়াড়ায়। তিন জনের মাথাতেই হেলমেট ছিল। শিয়ালদহ উড়ালপুল থেকে এপিসি রোডের দিকে নামার সময়ে একটি বাস বাইকে ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম অবস্থায় নিখাত, আব্দুল ও নুরজাহানকে এন আর এসে নিয়ে যাওয়া হলে বাবা ও মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মৃতদের আত্মীয়েরা জানিয়েছেন, আব্দুল পেশায় গাড়িচালক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি মোটর মেকানিকের কাজ করতেন। তাঁর এক ছেলেও রয়েছে।
রবিবার রাতে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দুর্ঘটনার খবর শুনে ভিড় করেছেন নিখাতদের আত্মীয়েরা। কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আব্দুলের ছেলে। ওই প্রৌঢ়ের এক আত্মীয় বলেন, ‘‘আমরা বাড়িতে ছিলাম। আচমকা এই খবর পেয়ে চলে আসি। এত হাসিখুশি মানুষটা এ ভাবে চলে গেল?’’ পরিবার সূত্রের খবর, নিখাত কলেজে পড়তেন। আব্দুলের প্রতিবেশীরা জানান, এলাকায় তিনি নির্বিবাদী মানুষ বলেই পরিচিত ছিলেন।
এ দিনের ঘটনায় মৃতদের পরিজনেদের দাবি, দু’টি বাসের রেষারেষির জেরে এই ঘটনা। এই অভিযোগ ফের শহরের রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ির দাপট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্রসঙ্গত, নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা দায়িত্ব নিয়েই রাস্তায় বেপরোয়া বাস এবং গাড়িতে লাগাম টানতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশ কতটা পালিত হয়েছে, এ দিনের ঘটনার পরে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিত্যযাত্রীদের অনেকেই বলছেন, শিয়ালদহ উড়ালপুলে রাজাবাজারের দিকে বাসের রেষারেষি নিত্য দিনের ঘটনা। তা রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরেই বাস ফেলে চম্পট দেন চালক। বাসটি আটক করা হয়েছে। খোঁজ শুরু হয়েছে অভিযুক্ত চালকের।