প্রতীকী ছবি
মেয়ে ও নাতনিকে বালিতে রাখতে এসে অপহৃত হয়েছিলেন শ্বশুর। তাঁর খোঁজ পেতে এ বার জামাইয়ের এক বন্ধুর ভাইকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ঘটনায় আগেই পাকড়াও করা হয়েছে জামাই প্রদীপ ঘোষকে। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার রাতভর মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালালেও খোঁজ মেলেনি দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী তপন দাসের।
পুলিশ জানায়, জেরায় প্রদীপের দাবি, তাঁর বন্ধু করিম শেখ অপহরণ করেছে। কিন্তু বালি রাসবাড়ি এলাকায় মেয়ে ছন্দবাণী ও ছ’বছরের নাতনি পারমিতাকে দিতে আসবেন তপনবাবু এবং রবিবার ফিরে যাবেন এটা প্রদীপ ছাড়া কেউ জানতেন না। পুলিশের অনুমান, তপনবাবুর গতিবিধি করিমকে জানান প্রদীপই।
পুলিশ জানায়, আদতে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপের পাশের গ্রামে থাকেন করিম। বুধবার সেখানে হানা দিয়ে করিমকে না পেয়ে তাঁর ভাই রহিমকে ধরে পুলিশ। বৃহস্পতিবার এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘করিমের ফোন বন্ধ থাকায় সূত্র মিলছে না। মনে হচ্ছে প্রদীপের গ্রেফতারের খবরে তপনবাবুকে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি।’’ এ দিন বালি থানায় তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেন বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া।
পুলিশ জানায়, বছর সাতেক আগে ছন্দবাণীর বিয়ে হলেও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরে তপনবাবু সংবাদপত্রে মেয়ের বিয়ের জন্য বিজ্ঞাপন দেন। তখন বেলুড়ের বাসিন্দা প্রদীপ ঘুরে ঘুরে মশলা বিক্রি করতেন। ওই বিজ্ঞাপন দেখার পরে প্রদীপ একই সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন, ‘বাড়িতে মশলার ব্যবসার জন্য ছোট কারখানা খুলতে সহযোগিতা করবেন এবং ঘরজামাই রাখতে ইচ্ছুক পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি। বিবাহবিচ্ছিন্না হলেও আপত্তি নেই’। তা দেখেই প্রদীপের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তপনবাবু। বিয়ের পরে মশলার ব্যবসা ছেড়ে চাকরি দেওয়ার এজেন্সি খোলেন প্রদীপ। চাকরির টোপ দিয়ে ৫-৮ লক্ষ টাকা হাতান। টাকা তুলতেন করিম। দুর্গাপুরেই ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে কোয়ার্টার কেনেন প্রদীপ। প্রতারিতেরা করিমকে টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিলে জমি বিক্রি করে ৩০ লক্ষ টাকা ফেরৎ দেন তিনি। কিন্তু প্রদীপ পালিয়ে বেড়াতে থাকেন। ছন্দবাণী জানান, টাকার জন্য তাঁদের বাড়িতে যেতেন বলে তপনবাবুও করিমকে চিনতেন।