Airport

বোর্ডিং কার্ড নয়, মুখের ছবি তুলেও ওঠা যাবে বিমানে

কী ভাবে কাজ করবে ‘ডিজিযাত্রা’? বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পের অধীনে এই ব্যবস্থায় টার্মিনালে ঢোকার পরে যাত্রীর মুখের ছবি তোলা হবে। এ জন্য আনা হচ্ছে ‘ফেস রিডিং’ মেশিন।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ১০:৩০
Share:

চালু হতে চলেছে ডিজিযাত্রা

লাইনে দাঁড়িয়ে বোর্ডিং কার্ড নেওয়ার দিন শেষ। এ বার মুখের ছবি তুলিয়েই সোজা বিমানে উঠতে পারবেন যাত্রীরা! আগামী মার্চ থেকেই কলকাতা বিমানবন্দরে চালু হতে চলেছে এই নতুন ব্যবস্থা।

Advertisement

আগামী দিনে কাগজের ব্যবহার কমিয়ে ফেলার লক্ষ্যেই ‘ডিজিযাত্রা’ নামে এই ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে কলকাতা বিমানবন্দরে। বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আপাতত এয়ার ইন্ডিয়া ও ভিস্তারা উড়ান সংস্থার যাত্রীরাই এই ‘ফেস রিকগনিশন’-এর সুবিধা পাবেন। নতুন ব্যবস্থার পাশাপাশি থাকছে পুরনো বোর্ডিং পাস দেওয়ার ব্যবস্থাও। পরবর্তী কালে সারা দেশে এই ব্যবস্থা চালু হয়ে গেলে যাত্রীদের জন্য বোর্ডিং কার্ড আর ছাপতে হবে না। ফলে কাগজ বাঁচবে।

কী ভাবে কাজ করবে ‘ডিজিযাত্রা’? বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পের অধীনে এই ব্যবস্থায় টার্মিনালে ঢোকার পরে যাত্রীর মুখের ছবি তোলা হবে। এ জন্য আনা হচ্ছে ‘ফেস রিডিং’ মেশিন। ওই দুই উড়ান সংস্থার ইচ্ছুক যাত্রীদের প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। সেই সময়েই আধার কার্ড ও অন্য পরিচয়পত্র দেখানোর পাশাপাশি মুখের ছবি তুলিয়ে নিতে হবে। এর জন্য টার্মিনালে ঢোকার মুখে ও ভিতরে বসানো হবে রেজিস্ট্রেশন কিয়স্ক। সেখানে রেজিস্ট্রেশন করালে যাত্রীর মোবাইলেই চলে আসবে লিঙ্ক, যেখান থেকে যাত্রীর মোবাইলে চলে আসবে বোর্ডিং কার্ড। যাত্রীর ছবি মিলিয়ে দেখার জন্য টার্মিনালে ঢোকার মুখে দু’টি, সিকিউরিটি চেক-এর মুখে দু’টি এবং বোর্ডিংয়ের সময়ে দু’টি গেটে থাকবে ফেস-রিডিং যন্ত্র। যে যাত্রী ছবি তুলিয়েই বিমান উঠতে ইচ্ছুক, তাঁকে মোট তিন বার ওই গেট পেরোতে হবে।

Advertisement

গঙ্গাসাগর মেলার জন্য অতিরিক্ত বাস-ট্রেন

তবে কোনও কোনও যাত্রীর এ ভাবে নিজের ছবি তোলাতে আপত্তি থাকতে পারে, সে কথা মাথায় রেখে এখনই বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে না। কৌশিকবাবুর কথায়, ‘‘মার্চের পর থেকে এয়ার ইন্ডিয়া ও ভিস্তারার যে যাত্রীরা বোর্ডিং কার্ড ছাড়া যেতে চাইবেন, শুধু তাঁদের জন্যেই এই ব্যবস্থা।’’

সুবিধা কী হবে? বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, বিমানে ওঠার জন্য ‘ডিজিযাত্রা’-র যাত্রীদের কোথাও লাইন দিতে হবে না। মেট্রো স্টেশনে যন্ত্রে টোকেন বা স্মার্ট কার্ড ছোঁয়ালেই গেট খুলে যায়, সে ভাবেই ‘ডিজিযাত্রা’র যাত্রীদের জন্য বসানো দরজা কাজ করবে। বর্তমানে টার্মিনালে ঢোকার মুখে সিআইএসএফ কর্মীরা টিকিট ও পরিচয়পত্র খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে তবেই যাত্রীকে বিমানবন্দরে ঢুকতে দেন। সেখানেও লাইনে দাঁড়াতে হবে না ‘ডিজিযাত্রা’-র যাত্রীদের। সে ক্ষেত্রে ফেস-রিডিং যন্ত্র বসানো গেটের সামনে দাঁড়ালে যাত্রীর মুখের ছবি মিলিয়ে দেখে খুলে যাবে দরজা। একই ভাবে সিকিয়োরিটি চেক-এর ক্ষেত্রে যাত্রীদের লাইন এড়িয়ে যাওয়া যাবে বলেই দাবি কর্তৃপক্ষের। প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা সফল হলে তিন মাস পরে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবে বিমানবন্দরে।

ভারতে যে সংস্থা এই ‘ডিজিযাত্রা’-র কাজ করছে, সেই এনইসি সংস্থার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে দেশের ১৩২টি বিমানবন্দরের মধ্যে কলকাতা ছাড়াও বারাণসী, পুণে ও বিজয়ওয়াড়া বিমানবন্দরে প্রথম পর্যায়ে ‘ডিজিযাত্রা’র সূচনা হচ্ছে। দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুর মতো বেসরকারি বিমানবন্দরও আলাদা ভাবে এই ‘ডিজিযাত্রা’ চালু করছে বলে ওই সংস্থার সূত্রে জানানো হয়েছে। হিথরো, জেএফকে, চাঙ্গি-র মতো বিশ্বের তাবড় বিমানবন্দরেও ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে এই ব্যবস্থা। জাপানের নারিটা এবং আমেরিকার ডেলটা উড়ান সংস্থাও যাত্রীদের জন্য এই ব্যবস্থা চালু করেছে বলে এনইসি জানিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement