কলকাতায় বাজি পুড়িয়ে দীপাবলি উদ্যাপন। —ফাইল চিত্র।
দীপাবলিতে কলকাতা এবং লাগোয়া এলাকায় ব্যাপক বাজি ফেটেছে। শব্দবাজির দাপটে কান পাতা দায় হয়েছিল শহরে। রাতে বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়ে প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে অনেককে।
কলকাতা পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রবিবার রাত ১২টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোট ৪১৪ কেজি বাজি উদ্ধার করা হয়েছে। বেআইনি ভাবে ওই সব বাজি সংগ্রহ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, এক রাতে মোট ৪৪৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাজি ফাটানো এবং সেই সংক্রান্ত গোলমালের জেরে এই গ্রেফতারি।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার রাতে শুধু নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর অপরাধে ২৭৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া, বচসা এবং দুর্ব্যবহারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন আরও ১৭১ জন।
শব্দবাজির তাণ্ডব অবশ্য এতে ঠেকানো যায়নি। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রবিবার রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় শব্দদূষণ হয়েছিল মাত্রাছাড়া। হাসপাতাল থেকে শুরু করে শিল্পাঞ্চল কিংবা সাধারণ বসত এলাকা, সর্বত্রই শব্দ দানব দাপিয়ে বেড়িয়েছে। রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তার দাপট বেড়েছে।
রবিবার রাত ১২টা নাগাদ আরজি কর হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় শব্দের মাত্রা ছিল ৬১.৯ ডেসিবেল। ওই এলাকা ‘সাইলেন্স জ়োন’-এর মধ্যে পড়ে। সেখানে ওই সময় ৪০ ডেসিবেলের বেশি শব্দের মাত্রা হওয়ার কথা নয়। এ ছাড়া, বিরাটি, বাগবাজারের মতো বসত এলাকায় শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেলের পরিবর্তে পৌঁছে গিয়েছিল যথাক্রমে ৬০.৮ ডেসিবেল এবং ৭৪.৭ ডেসিবেল।
এসএসকেএম হাসপাতালের কাছে রবিবার রাতে শব্দের মাত্রা ছিল ৫১.৪ ডেসিবেল। ওই এলাকাও ‘সাইলেন্স জ়োন’। এ ছাড়া, নিউ মার্কেটের মতো বাণিজ্যিক এলাকায় রাতে শব্দের পারদ ছুঁয়েছিল ৮১.৫ ডেসিবেলে। কসবা শিল্পাঞ্চলে শব্দদূষণের মাত্রা ছিল ৮২.৩ ডেসিবেল। এই এলাকাগুলিতে শনিবারও শব্দের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেশি ছিল। রবিবার বিকেলের পর থেকেই বাজির শব্দ কানে আসতে শুরু করে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দেদার বাজি ফাটানো হয়েছে শহর এবং শহরতলিতে। শব্দবাজির পাশাপাশি, সাধারণ আতশবাজিও পোড়ানো হয়। এতে শহরে বায়ুদূষণের মাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে।