ফাইল চিত্র।
ধাপায় গল্ফ কোর্স, টেনিস কোর্ট না অন্য কিছু হবে, সেই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের উপরে নির্ভর করতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। ওই কমিটিই জানাবে, কোন সংস্থার মাধ্যমে ধাপা প্রকল্পের সার্থক রূপায়ণ করা যায়। কমিটিতে থাকবেন পরিবেশবিদ, পরিবেশকর্মী-সহ পুর প্রতিনিধিরা। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘কমিটি দরপত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত যে সংস্থাকে দায়িত্ব দিতে বলবে, তাদেরই দায়িত্ব দেওয়া হবে।’’
প্রসঙ্গত, পুরসভার তরফে ধাপার প্রকল্প রূপায়ণের জন্য পরামর্শদাতা বিশেষজ্ঞ সংস্থার খোঁজে গত বছরের মে মাসে দরপত্র ডাকা হয়েছিল। তাতে ধাপার যে অংশ (প্রায় ১২.১৪ হেক্টর) রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে বায়ো রেমিডিয়েশন পদ্ধতির (যে প্রক্রিয়ায় সজীব বস্তু ব্যবহার করে মাটি, জল বা কোনও এলাকার দূষণ কমানো হয়) মাধ্যমে দূষণমুক্ত করা হয়েছে, সেখানে পরিবেশবান্ধব রাজস্ব সংগ্রহ প্রকল্প (ইকো-ফ্রেন্ডলি রেভিনিউ জেনারেটিং প্রোজেক্ট) রূপায়ণের জন্য বিশেষজ্ঞ সংস্থার খোঁজ করা হয়েছে। তাতে সাড়াও মিলেছিল। কিন্তু প্রকল্প রূপায়ণে ফাঁক যাতে না থাকে, তাই সম্প্রতি ফের দরপত্র আহ্বান করেছে পুরসভা।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এই প্রকল্পে সিংহভাগ অর্থসাহায্য করছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। তাদের শর্ত, ওই জমির দূষণমুক্ত অংশ বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অন্য সংস্থাকে দিতে পারবেন না পুর কর্তৃপক্ষ। তবে তাঁরা নিজে যদি এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে রাজস্ব সংগ্রহের প্রকল্প করতে চান, তা করতে পারেন। সেই সূত্রেই হর্টিকালচার সেন্টার, বটানিক্যাল সেন্টার, গল্ফ কোর্স, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, টেনিস কোর্ট, বিয়েবাড়ি ভাড়া দেওয়া-সহ একাধিক ব্যবস্থা নিয়ে পুর আধিকারিকদের মধ্যে আলোচনা হয়। এক পুরকর্তার বক্তব্য, ‘‘যে মডেলটি পুরসভার পক্ষে সব চেয়ে লাভজনক হবে, সেটাই বিশেষজ্ঞ কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে গ্রহণ করা হবে।’’
পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ধাপার ওই অংশ ২০০৯-’১০ সাল নাগাদ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। জঞ্জালের স্তূপকে বায়ো রেমিডিয়েশন পদ্ধতিতে ‘ক্লোজ়’ করা হয়েছে পর্ষদের তরফে। মাটি কেটে নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে উপরে এসটিপি শিট, জিয়ো টেক্সটাইল, উদ্ভিদের আচ্ছাদন দেওয়া হয়েছে। যাতে কোনও ভাবে জঞ্জাল নিঃসৃত তরল বা জঞ্জাল থেকে গ্যাস বেরিয়ে এলাকা দূষিত করতে না পারে। নতুন প্রকল্পের ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থিতাবস্থা বজায় রাখার দায়িত্ব পুরসভার। পুর আধিকারিকদের বক্তব্য, আগে বিনোদন পার্ক, পাখিরালয় তৈরির কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তাই এ বার পরামর্শদাতা সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছে পুরসভা।