আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ। ফাইল চিত্র।
ক্যানসারের তিনটি ওষুধের পরীক্ষামূলক গবেষণা আটকে রয়েছে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে। অভিযোগ, গবেষণা চালু করার জন্য নৈতিকতা কমিটির (এথিক্স কমিটি) অনুমতি মিললেও, কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দিচ্ছেন না। তাই দীর্ঘ দিন ধরে তিনটি ওষুধের গবেষণা থমকে আছে। যদিও শহরের অন্য দুই সরকারি মেডিক্যাল কলেজে চলছে ওই ওষুধের গবেষণা।
বিভিন্ন রোগের ওষুধ বাজারে আসার আগে তার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, অর্থাৎ পরীক্ষামূলক গবেষণা হওয়া দস্তুর। ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)-র ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই ওই ওষুধ রোগীদের উপরে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি স্তরে বিভিন্ন হাসপাতালকে বেছে নেয় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। এর পরে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের নৈতিকতা কমিটি বিষয়টি বিবেচনা করে ছাড়পত্র দেয়। কিন্তু আর জি করে সেই কমিটি ছাড়পত্র দিলেও দীর্ঘ দিন ধরে অধ্যক্ষের প্রয়োজনীয় অনুমতি মিলছে না। ফলে, শুরু করা যাচ্ছে না গবেষণা। মঙ্গলবার ওই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকের পরে চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায় বলেন, “ওই একই গোত্রের ওষুধ সরকার বিনামূল্যে দেয়। তাই নতুন করে অন্য সংস্থার তৈরিওষুধের গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা দেখতে অধ্যক্ষের নেতৃত্বে কমিটি গড়া হয়েছে। তারা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে।’’
যদিও চিকিৎসকদের একাংশের প্রশ্ন, যিনি বিষয়টি আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ, সেই অধ্যক্ষের নেতৃত্বেই কমিটি তৈরি হল কেন? এ দিন সুদীপ্ত দাবি করেন, বহুজাতিক সংস্থাগুলির সঙ্গে চিকিৎসকদের একাংশের অনৈতিক যোগাযোগ থাকে বলে তাঁরা বেসরকারি স্তরের গবেষণায় এত উৎসাহ দেখান। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে ওই একই ওষুধের পরীক্ষামূলক গবেষণা এসএসকেএম ও নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে চলছে কী ভাবে? সুদীপ্ত বলেন, “যেখানে হচ্ছে হোক। আর জি করে অনৈতিক বিষয়কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’’ রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, “বিষয়টি স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তাকে খোঁজ নিয়ে দেখতে বলেছি।’’
আর জি কর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, গবেষণার সঙ্গে যুক্ত কয়েক জন চিকিৎসকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সম্প্রতি নাড়াচাড়া শুরু হতেই তাঁরা অহেতুক শোরগোল করছেন। অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ বলেন, ‘‘যা বলার, রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বলেছেন। আমার কিছু বলার থাকলে স্বাস্থ্য ভবনে জানাব।’’