দ্বিতীয় দফায় হকার উচ্ছেদের পরে। রবিবার, সল্টলেকের সিকে মার্কেটের কাছে। ছবি: শৌভিক দে
হকার উচ্ছেদ অভিযান শুরুর সময়ে বিধাননগর পুরসভা জানিয়েছিল, পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা চলছে। একই কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রীও। এমনকী হকারদের সমর্থন করে তৃণমূলেরই একাংশের তরফে দাবি উঠেছিল, পুনর্বাসন না দিয়ে দল নীতি ভাঙলে মানুষের বিশ্বাস হারাবে। কিন্তু, গত মঙ্গলবার উচ্ছেদ অভিযানের পরে পাঁচ দিন কেটে গেলেও পুনর্বাসন সম্পর্কে পুরসভার তরফে স্পষ্ট কোনও ঘোষণা এখনও হয়নি। তৃণমূল নেতৃত্ব উচ্ছেদের বিরোধিতা করেননি। বিরোধী দলের কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে নিন্দা করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু হকারদের তরফেও একটি মিছিল ছাড়া আর কোনও প্রতিবাদ সে ভাবে দেখা যায়নি।
এই অবস্থায় রবিবার সকালে দ্বিতীয় দফার উচ্ছেদ অভিযানে নামল বিধাননগর পুর প্রশাসন। বিক্ষিপ্ত ভাবে হকারেরা প্রতিবাদ করার চেষ্টা হলেও লাভ হয়নি।
কার্যত কোনও বাধার মুখেই পড়তে হয়নি পুর প্রশাসনকে। এ দিন এক দিকে করুণাময়ী মোড় থেকে ১০ নম্বর ট্যাঙ্কের মোড়, অন্য দিকে বিদ্যাসাগর মোড় পর্যন্ত ফুটপাথের ধার থেকে অস্থায়ী ও স্থায়ী দোকান সরিয়ে দেওয়া হয়। করুণাময়ী মোড়ের পরে ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে একটি শপিং মলের চারপাশের রাস্তায় দখলদারি নিয়ে দীর্ঘ দিন সরব ছিলেন বাসিন্দারা। সেখানেও একটি অংশে উচ্ছেদ অভিযান চলে।
হকারদের অভিযোগ, তাঁদের ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। যদিও পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীদের একাংশ এ দিন সকালে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তাঁর দেখা না পেলেও ব্যবসায়ীরা তাঁদের অভিযোগ জমা দিয়ে এসেছেন। যদিও এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি হকারেরা।
হকারদের একাংশের অভিযোগ, পুর প্রশাসন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বেছে বেছে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযোগ অস্বীকার করে পুরসভা জানিয়েছে, পর্যায়ক্রমে গোটা সল্টলেকেই দখল হয়ে থাকা রাস্তা এবং ফুটপাথ উন্মুক্ত করা হবে।
তবে অনেক জায়গায় ব্লকের ভিতরের রাস্তা ও ফুটপাথে হকার এবং স্থায়ী দোকান রয়েছে। সেগুলির ক্ষেত্রে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি পুর কর্তৃপক্ষ।
তবে উচ্ছেদ চলাকালীন করুণাময়ী আবাসনের ভিতরে ঢুকে পুলিশ যে অভিযান চালিয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। যদিও পুলিশের একাংশের বক্তব্য, কিছু হকার তাঁদের মালপত্র আবাসনের ভিতরে রেখেছিলেন। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁদের ভিতরে ঢুকতে হয়েছিল।
বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত জানান, উচ্ছেদ অভিযান চলবে। গোটা সল্টলেকেই রাস্তা এবং ফুটপাথ উন্মুক্ত করা হবে। যদি কারও মনে হয় বেআইনি কাজ হচ্ছে, তিনি আদালতে যেতে পারেন। দল বা প্রশাসন থেকে উচ্ছেদ বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনও নির্দেশ আসেনি।